পুলিশি কাস্টডিতে নির্যাতনের স্বীকার ছাত্রশিবির নেতা মো.জুনেদ

প্রকাশিত: ২:৩৬ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৯, ২০১৮

পুলিশি কাস্টডিতে নির্যাতনের স্বীকার ছাত্রশিবির নেতা মো.জুনেদ

স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটে সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সভায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছাত্রশিবির কর্মী জুনেদ আহমদকে পুলিশ গ্রেফতারের ৫ ঘন্টার পর পরিবারের কাছে তাকে হস্তান্তর হয়েছে।

গতকাল শনিবার রাতে রাত সাড়ে আটটার দিকে নগরের কিন ব্রিজ এলাকায় আওয়ামী লীগের এক নির্বাচনী সভায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয় এসময় তারা ইটপাটকেল ও চেয়ার ছুড়াছুড়ি করতে থাকেন।

এসময় রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের সময় মো. জুনেদ আহমদ নামের  সিলেট এমসি কলেজ  ছাত্রশিবিরের এক কর্মীকে  আটক করে পুলিশ। পরে তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে সিলেট কোতোয়ালী মডেল থানায় নিয়ে যায়। দীর্ঘ ৫ঘন্টা পুলিশ কাস্টডিতে তার উপর পুলিশি নির্যাতন করা হয়। এসময় তার শরীরে বিভিন্ন দাগের চিন্ন দেখতে পাওয়া যায়।

 

আটককৃত মো.জুনেদ আহমদ কানাইঘাট উপজেলার ডাক -মানিকগঞ্জবাজার ব্রাহ্মণ গ্রামের মো.সামছুল হকের ছেলে । সে জামায়াতে ইসলামী সংগঠন সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রশিবির কর্মী।

পরে পুলিশ থাকে আটক করে থানায় নিয়ে গেলে  জুনেদের পিতা মো.সামছুল হক স্থানীয় এলাকার এক প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতার সুপারিশে দীর্ঘ ৫ ঘন্টা পর  রাত ২টার সময় পুলিশ থাকে ছেড়ে দেয়।

 

 

এ বিষয়ে মো.সামছুল হক ডায়ালসিলেটকে জানান, আমার ছেলে জুনেদ আহমদকে কোন কারণ ছাড়াই বিনাদোষে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এসময় পুলিশ আমার ছেলেকে বেধড়ক মারধর এবং লাঠিচার্জ করে গুরুত্বর আহত করে। পরে আমাদের গ্রামের এক প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতার সুপারিশে ৫০ হাজার টাকার ( মুক্তিপন ) বিনিময়ে থানা থেকে আমার ছেলেকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে আসি।

 

এবিষয়ে গুরুত্বর আহত ছাত্রশিবির নেতা মো. জুনেদ আহমদের সাথে কথা বললে তিনি ডায়ালসিলেটকে বলেন, আমি কীনব্রীজ থেকে আমার বন্ধুর সাথে দেখা করে বাসায় ফেরার পথে ছাত্রলীগের কিছু সন্ত্রসীরা বিনা কারণে আমার দিকে ইঙ্গিত করে পুলিশকে দেখিয়ে আমাকে আটক করার জন্য বলে, সেই মুহূর্তে কয়েকজন পুলিশ আমাকে কোনকিছু না বলে আমাকে ধরে থানায় নিয়ে যায়।

 

পরে পুলিশ আমার উপর মানসিক ও শারীরিক নিযাতন করে এবং লাঠি দিয়ে পেঠাতে থাকে। এসময় পুলিশে এক এসআই আমাকে বলে ‘ শালার পোত আর ছাত্রশিবির করবি‘ তরে জানে মাইরা ফেলমু দুনিয়া থাইকা উঠাইয়া দিমো। আমারে চিনছ। রাজনীতি ছাইরা দে নাইলে বাচতে দিমু না তরে।

 

উল্লেখ্য, আসন্ন সিলেট  সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারের শেষ দিনে সিলেট আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেষ নির্বাচনী পথসভাটি নগরের কিন ব্রিজ এলাকায় আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু হওয়া ওই সভা রাত সাড়ে আটটার দিকে মঞ্চে বক্তিতা নিয়ে সিলেট ছাত্রলীগের সাবেক নেতা কামরুল ইসলাম সাথে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক বহিষ্কৃত সভাপতি পংকজ পুরকায়স্থ কথা কাটাকাটি হয়। আর তখনই ঘটনার সূত্রপাত হয়।

 

এরপর শুরু হয় মঞ্চে চেয়ার ছুড়াছুড়ি এক পযায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে বেশকয়েকজন গুরুত্বর  আহত সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এসময় রাস্তায় যাতায়াতের সময়  সিলেট ছাত্রলীগের সাবেক নেতা কামরুল ইসলাম ইন্ধনে সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রশিবির কর্মী জুনেদ আহমদকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। দীর্ঘ ৫ ঘন্টার পর ৫০হাজার টাকার বিনিময়ে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়।

 

 

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ