কৃষক লীগের সম্মেলন বেলা ১১টায় উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৯:০৯ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৬, ২০১৯

কৃষক লীগের সম্মেলন বেলা ১১টায় উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

ডায়ালসিলেট ডেস্ক:দীর্ঘ আট বছর পর কৃষক লীগের জাতীয় সম্মেলন হতে যাচ্ছে। আজ বুধবার বেলা ১১টায় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিকালে দ্বিতীয় অধিবেশনে নির্বাচিত হবে সংগঠনটির আগামী তিন বছরের নেতৃত্ব।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনের মঞ্চ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের (ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট সংলগ্ন) গেটের অদূরে উত্তর-দক্ষিণমুখী করে বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে।

মঞ্চে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশাল আকারের ছবি শোভা পাচ্ছে।

মঞ্চটি লম্বায় ৯০ ফুট আর প্রস্থে ৩০ ফুট। মঞ্চ সাজানো হয়েছে গ্রামবাংলার কাচারি ঘরের আদলে। রয়েছে ‘একটি বাড়ি একটি খামার?’ প্রকল্পের প্রতীকীরূপও। সামনে থেকে দেখতে মূল মঞ্চকে মনে হয় বনের মধ্যে আয়োজন।

চারদিকে গাছগাছালির আধিক্য থাকছে। এ ছাড়া মূল মঞ্চের সামনে আরও দুটি ছোট মঞ্চ করা হয়েছে।

এর একদিকে থাকবে কৃষকদের সবজির বাজার, অন্যদিকে থাকবে কৃষক নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সম্মেলনে সারা দেশের প্রায় ছয় হাজার কাউন্সিলর অংশগ্রহণ করবেন।

প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অবাধ প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

এ ছাড়া উদ্যানে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ‘একটি বাড়ি, একটি খামার’ স্লোগানকে সামনে রেখে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কৃষক লীগ সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন।

দেশে কৃষির উন্নয়ন এবং কৃষকের স্বার্থরক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ কৃষক লীগ প্রতিষ্ঠা করেন।

সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সম্মেলন হয় সর্বশেষ ২০১২ সালের ১৯ জুলাই। তিন বছর কমিটির মেয়াদ থাকলেও চলেছে প্রায় আট বছর।

শুধু কেন্দ্রীয় কমিটি নয়, জেলা পর্যায়ের কমিটিগুলোও বিভিন্ন কারণে ঝিমিয়ে পড়েছে। তবে এবার জাতীয় সম্মেলন ঘিরে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে সংগঠনটিতে।

কৃষক লীগের জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকার বিটু বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আমরা সারা ঢাকা শহরে প্রচারণা চালিয়েছি। কৃষক লীগ যেহেতু গ্রামের সংগঠন, সেহেতু জেলাগুলোতে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।

জানা যায়, কৃষক লীগের বর্তমান কার্যনির্বাহী কিমিটির সদস্য সংখ্যা ১১১। এটা সংশোধন করে ১৫১ জন করার প্রস্তাব করা হবে।

প্রস্তাবে সহসভাপতি ১৬ জন থেকে বাড়িয়ে ২১ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ৩ জন থেকে ৫ জন ও সাংগঠনিক সম্পাদক ৭ জন থেকে বাড়িয়ে ৯ জন করার কথা থাকছে।

এ ছাড়া নতুন যুক্ত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক, ক্রীড়া ও যুববিষয়ক সম্পাদক, কৃষি শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক, কৃষি উপকরণবিষয়ক সম্পাদক, কৃষিপণ্য পরিবহনবিষয়ক সম্পাদক পদ।

আগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ১০টি বিভাগীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে একটি করে সহসম্পাদকের পদ ছাড়াও সব বিভাগীয় সম্পাদকের সঙ্গে সহসম্পাদক রাখার প্রস্তাব করা হচ্ছে।

জেলা-উপজেলা কমিটির আকারও বৃদ্ধির প্রস্তাব দেবে গঠনতন্ত্র উপকমিটি। বর্তমান জেলা কমিটি ৮১ জনবিশিষ্ট, যা ৯১ সদস্যবিশিষ্ট করার প্রস্তাব থাকছে। উপজেলা কমিটি ৭১ জনের স্থলে ৮১ জনের প্রস্তাব করা হবে। পাশাপাশি ইউনিয়ন বা সমমর্যাদার কমিটি ৬১ থেকে বাড়িয়ে ৭১ আর ওয়ার্ড কমিটি ৫১ থেকে বাড়িয়ে ৬১ করার প্রস্তাব করা হবে।

এ ছাড়া এবার কয়েকটি সম্পাদকীয় পদের নামের সংশোধনী আনার প্রস্তাব করা হচ্ছে। সমবায় সম্পাদকের স্থলে কৃষি সমবায় সম্পাদক, কুটির শিল্পের স্থলে কৃষি-শিল্প ও বাণিজ্য, মৎস্য ও পশুর স্থলে মৎস্য ও প্রাণী, কৃষিবিজ্ঞান ও প্রযুক্তির স্থলে কৃষিবিজ্ঞান ও আইটিবিষয়ক সম্পাদক, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদকের স্থলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক করার প্রস্তাব করা হবে।

কৃষক লীগকে গণমুখী ও গতিশীল করতে গঠনতন্ত্র সংশোধন করা হচ্ছে বলে সংগঠনটির কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন।

তাদের মতে, এটা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। এদিকে দেশের বাইরে কৃষক লীগের কমিটি দেয়া নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তাই বিদেশে কমিটি দেয়ার ক্ষেত্রে কঠোরতা আনা হচ্ছে গঠনতন্ত্রে।

জানতে চাইলে কৃষক লীগের সিনিয়র সহসভাপতি কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা বলেন, সম্মেলনের মধ্য দিয়ে কৃষক লীগের গঠনতন্ত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

এর মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটি ১৫১ সদস্য করার প্রস্তাব করা হবে। এ ছাড়া সহসভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক পদও বাড়ানোর প্রস্তাবনা থাকছে।

সংগঠনটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ সমীর চন্দ বলেন, আমাদের গঠনতন্ত্র উপকমিটি ৬-৭টা মিটিং করে গঠনতন্ত্র সময়োপযোগী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির আকার বাড়ানো এবং বিদেশ কমিটি দেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের সাংগঠনিক নেত্রীর (শেখ হাসিনা) অনুমোদনের বিষয় রয়েছে।

0Shares