সিলেটের রাজপথে বঙ্গবন্ধুর ভাষন শোনানো যার কাজ একজন মুজিব প্রেমী দ্বিজেন্দ্র লালের গল্প

প্রকাশিত: ৮:৩৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৩, ২০২০

সিলেটের রাজপথে বঙ্গবন্ধুর ভাষন শোনানো যার কাজ একজন মুজিব প্রেমী দ্বিজেন্দ্র লালের গল্প

রাজনীতি করেন কিন্তুু পদ পদবীর আশা করেন না এমন রাজনৈতিক সমাজে বিরল। সংগঠন করলে, বিভিন্ন কর্মসূচি ও সভা সমাবেশে যোগ দেয়াটাও স্বাভাবিক রাজনৈতিক এক্সারসাইজ। কিন্তুু কোন সংগঠনের সাথে সরাসরি জড়িত না থেকেও কোর্ট পয়েন্ট কিংবা চৌহাট্রা, আলীয়ার মাঠ কিংবা রিকাবীবাজার পয়েন্ট সিলেটের সকল রাজপথে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের সকল সভা সমাবেশে যার সরব উপস্থিতি ব্যাপক ভাবে লক্ষ্য করা যায় তিনি সিলেটের আওয়ামী পরিবারে অত্যন্ত সুপরিচিত ব্যাক্তি, নাম দ্বিজেন্দ্র লাল শর্মা।

এই দ্বিজেন্দ্র লাল এর কাজই হচ্ছে রাজপথ, কিংবা মাঠে ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষনগুলো নি:স্বার্থভাবে শুনিয়ে বেড়ানো। বঙ্গবন্ধুর প্রায় সবগুলো ভাষনই তার মুখস্থ, ঠোটস্থ। ভাষন শোনে কেউ টাকা পয়সা দিতে চাইলে তিনি তা নেন না বলে শোনা যায়।

তিনি কখনো কোন নেতা বা দলের ধার ধারেন না, কাউকে পরোয়া করেও কথা বলেন না। মাঠে ময়দানে ভাষন দেন বলে কেউই তাকে পাত্তা দিতে চান না, উল্টো “পাগল টাইপ” মানুষ বলে আখ্যা দেন অনেকেই। অবশ্য পাগল না বললে স্থানীয় অনেক নেতাদের ঘোর বিপদের শঙ্কা রয়েছে, কেননা এই পাগলের বক্তৃতায় সিলেটের অনেক নেতাদের কুকীর্তির কথা প্রায়ই উঠে আসে।

অবশ্য আমিও উনাকে পাগল বলি- তবে তিনি স্বার্থের পাগল নন,শেখ মুজিবের চেতনায় পাগল। তিনি ভুমি দখল,টিলা কর্তন, মাদক ব্যাবসার পাগল নন বরং মুজিব আদর্শের পাগল। তাই এরকম পাগল দ্বারা সমাজের আর যাই হোক ক্ষতি হবার নয়।

দিরাইয়ের ঘাগাটিয়া গ্রামে জন্ম নেয়া দ্বিজেন্দ্র লাল শর্মা ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে একজন নাবালক ছিলেন, কিন্তুু তত্কালীন সময়ে বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত প্রত্যেকটি ভাষন তার কিশোর মনকে ব্যাপক ভাবে নাড়া দিয়ে যায়। তিনি বনে যান একজন পাগল- যে পাগল জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান কে বুকে লালন করে নি:স্বার্থ, নিষ্কলুষ ভালোবাসায়।

দ্বিজেন্দ্র লাল ১৯৮৪ সালে এস.এস.সি পাস করলেও আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারনে আর পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারেন নি৷ পরবর্তীতে ১৯৮৮ সাল থেকে দীর্ঘদিন যাবত কোতোয়ালি থানায় মুহুরি হিসেবে কাজ করেন এই মুজিব প্রেমী। বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষে,একজন মুজিব ভাবাদর্শের পথিক হিসেবে এই নিস্কলুষ মুজিব প্রেমীর জন্য রইলো অজস্র অজস্র ভালোবাসা ও শুভকামনা ।

লেখক: সাংবাদিক,কলামিস্ট ::  আশীষ দে 

0Shares