মরণোত্তর একুশে পদক পেলেন কুলাউড়ার আব্দুল জব্বার

প্রকাশিত: ১২:৪২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০

মরণোত্তর একুশে পদক পেলেন কুলাউড়ার আব্দুল জব্বার

ডায়ালসিলেট ডেস্ক:আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ২০ ব্যক্তি এবং একটি প্রতিষ্ঠানের মাঝে ‘একুশে পদক-২০২০’ প্রদান করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এই বেসরকারি সম্মাননাপদক প্রাপক এবং তাদের পক্ষের লোকজনের হাতে তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এদিকে, আজ মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য, মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার সাবেক সাংসদ মরহুম আব্দুল জব্বারও পেয়েছেন (মরণোত্তর) একুশে পদক।

আব্দুল জব্বার ছাড়াও এবার যারা একুশে পদক পেলেন তারা হচ্ছেন- ভাষা আন্দোলনে আমিনুল ইসলাম বাদশা (মরণোত্তর), শিল্পকলায় (সংগীত) বেগম ডালিয়া নওশিন, শঙ্কর রায় ও মিতা হক, শিল্পকলায় (নৃত্য) মো. গোলাম মোস্তফা খান, শিল্পকলায় (অভিনয়) এম এম মহসীন, শিল্পকলায় (চারুকলা) অধ্যাপক শিল্পী ড. ফরিদা জামান, মুক্তিযুদ্ধে হাজি আক্তার সরদার (মরণোত্তর), আব্দুল জব্বার (মরণোত্তর), ডা. আ আ ম মেসবাহুল হক (মরণোত্তর), সাংবাদিকতায় জাফর ওয়াজেদ (আলী ওয়াজেদ জাফর), গবেষণায় ড. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ কারী আল্লামা সৈয়দ মোহাম্মদ ছাইফুর রহমান নিজামী শাহ, শিায় অধ্যাপক ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া, অর্থনীতিতে অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, সমাজসেবায় সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, ভাষা ও সাহিত্যে ড. নুরুন নবী, সিকদার আমিনুল হক (মরণোত্তর) ও বেগম নাজমুন নেসা পিয়ারি এবং চিকিৎসায় অধ্যাপক ডা. সায়েবা আখতার। আর ‘গবেষণা’য় একুশে পদক পেয়েছে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট।

ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে সরকার প্রতি বছরের মতো এবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দেয়া হয়েছে। পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, পুরস্কারের অর্থ এবং একটি সম্মাননাপত্র দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের একুশে পদক বিজয়ী হিসেবে ২০ ব্যক্তি এবং এক প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করে।

প্রসঙ্গত : মরহুম আব্দুল জব্বার ’৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬ এর ছয়-দফা, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০ এর নির্বাচন ও ’৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও রণাঙ্গণের যোদ্ধা এবং -এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।

এছাড়া তিনি কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সভাপতির পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে কেন্দ্রীয় কমিটি, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং ঘাতক নির্মূল কমিটি, কুলাউড়া থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক (১৯৬৪) ছিলেন। আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে, আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য জেল-জুলুম, নির্যাতন উপেক্ষা করে বাংলার গণমানুষের মুক্তির লক্ষ্যে কাজ করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর প্রতিবাদ করার কারণে তিনি দুইবার কারারুদ্ধ ছিলেন।

প্রথমবার জেল থেকে মুক্তি পেয়ে পূনরায় সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করলে পুনরায় কোরবানি ঈদের রাতে গ্রেপ্তার হন। জেলের অভ্যন্তরে বঙ্গবন্ধুর প্রধান খুনি মেজর নুর অমানুষিক নির্যাতন করে এবং হত্যার জন্য উদ্ধৃত হয়। সেই সময় তৎকালীন সেনা অফিসার, পরবর্তীতে রাষ্ট্রদূত প্রয়াত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আমিন আহমেদ চৌধুরী তাঁকে উদ্ধার করেন।

জাতির এ সূর্য সন্তান শোকের মাস আগস্টে ১৯৯২ সালের ২৮ আগস্ট মাত্র ৪৭ (১৯৪৫-১৯৯২) বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

0Shares