ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিবেশ রক্ষায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহবান

প্রকাশিত: ৩:৫০ অপরাহ্ণ, মার্চ ৬, ২০২০

ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিবেশ রক্ষায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহবান

ডায়ালসিলেট ডেস্ক :: বৃহত্তর সিলেটের প্রচুর লোক যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। মা ও মাটির টানে নানা প্রয়োজনেই সেসব দেশ থেকে সিলেটে তাদের যাতায়াত করতে হয়। এসব প্রবাসীদের সাথে বাংলাদেশের পতাকা বহনকারী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ‘বিমান বাংলাদেশে’র যোগসূত্র নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার কাজ করছে।

সরকারের আন্তরিক কর্মতৎপরতায় এরই মধ্যে দীর্ঘ আট বছর বন্ধ থাকার পর গত জানুয়ারিতে সিলেট-ম্যানচেষ্টার রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালু করা সম্ভব হয়েছে। যদিও এটি পরীক্ষামূলক। তবে, আগামী এপ্রিল থেকে সিলেট-লন্ডন ও সিলেট-ম্যানচেষ্টার সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়টি অনেকটাই নিশ্চিত। কেননা, সরাসরি ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে যাতায়াতের জন্য ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। এই বিমানবন্দর থেকে বোয়িং ৭৭৭ উড্ডয়নের জন্য উপযুক্ত রানওয়ে তৈরির কাজও চলমান। এখানে রিফুয়েলিং ব্যবস্থা রয়েছে। রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজও চলছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মানের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে। চলমান কাজ শেষ হলেই সরাসরি সিলেট-লন্ডন বা সিলেট-ম্যানচেষ্টার রুটে নিয়মিত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুতে আর কোন বাধা থাকবে না। আর লন্ডন বা ম্যানচেষ্টারকে কেন্দ্র করে আগামীতে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রেও ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে।

তবে, সিলেটের জনগোষ্ঠী ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে এখানে আমাদের খানিকটা দায় আছে। সিলেট ম্যানচেষ্টার ফ্লাইটটি পরীক্ষামূলক চালু হওয়ার পর তবে ব্রিটিশ সংস্থা Breathless: Highly dumbfounded: ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিদর্শন করবে। বিমানবন্দরের অবকাঠামোগত সুবিধা, আন্তর্জাতিক নানা সুযোগ-সুবিধা, নিরাপত্তা ও সার্বিক পরিবেশের ওপর তারা একটি প্রতিবেদন জমা দিবে যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে। এই রিপোর্টটি যদি সন্তোষজনক হয়, তবেই আগামীতে সিলেট-লন্ডন বা সিলেট-ম্যানচেষ্টার সরাসরি ফ্লাইট চালু হবে।

সার্বিক নিরাপত্তা রক্ষা বা বিমানবন্দরে হইচই-জটলার মতো পরিবেশ তৈরি না করতে  পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.একে আব্দুল মোমেন সিলেটবাসীকে আহবান জানান। বিশেষ করে, সরকারের কোনো মন্ত্রী, উর্ধ্বতন দায়িত্বশীল,
সরকারি বিভিন্ন বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে উপস্থিত হলে তাকে স্বাগত অথবা বিদায় জানানোর জন্য অনেক মানুষের ভীড় লক্ষ্য করা যায়। আইন-কানুন না মেনে অনেকেই বিমানবন্দরের সংরক্ষিত এলাকায় ঢুকে পড়েন। যা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও বিমানবন্দরের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।

উল্লেখ্য যে, ২০১৬ সালের ৮ মার্চ নিরাপত্তার অজুহাতে যুক্তরাজ্যের ট্রান্সপোর্ট ডিপার্টমেন্ট হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে সরাসরি কার্গো পণ্য পরিবহনে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেয়। এর আগে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ থেকে আকাশপথে কার্গো পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে অস্ট্রেলিয়া। নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশ থেকে ইইউ-গামী উড়োজাহাজের পণ্যগুলো দুবাই, কাতার, থাইল্যান্ড অথবা ভারতে পুনঃপরীক্ষা করা হতো। এর ফলে, বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণের রাজস্ব ক্ষতির মুখে পড়েছিলো।

এই নিষেধাজ্ঞার কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব গচ্চা দিতে হয়েছে।

কাজেই, এখন আমাদের সতর্ক ও সচেতন হওয়ার পালা। আইন অনুযায়ী, যখন কোনো যাত্রী আগমন করেন অথবা বাইরে যান, তখন তার সঙ্গে একজন দর্শনার্থী বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে পারেন। কিন্তু একজন ব্যক্তিকে স্বাগত বা বিদায় জানানোর জন্য যখন একাধিক ব্যক্তি আসেন, তখন বিমানবন্দরে জটলা তৈরি হয়। এতে ভোগান্তি বাড়ে; নিরাপত্তা ব্যবস্থাও বিঘ্নত হয়। আন্তর্জাতিক মান রক্ষায় এসব বিষয়ে এখন আমাদের সতর্ক হতে হবে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আহবান জানাচ্ছি।
আমার আশাবাদ, একটি সুন্দর, আধুনিক ও সমৃদ্ধ সিলেট গড়তে অতীতের মতো এবারও আপনাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

0Shares