প্রকাশিত: ১:১৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৬, ২০২০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: যুক্তরাষ্ট্রের রক্তচক্ষু তোয়াক্কা না করে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ জানিয়েছেন, ইরানের মন্ত্রিসভা চুক্তির চূড়ান্ত খসড়া অনুমোদন করেছে। বাকি রয়েছে দুই দেশের পার্লামেন্টের অনুমোদন এবং দুই প্রেসিডেন্টের সই।
চীন ও ইরানের এই চুক্তি মধ্যপ্রাচ্য তথা এশিয়ার বিরাট একটি অংশের ভূরাজনৈতিক চালচিত্র বদলে দেবে। শুরু হবে এক নতুন বিশ্বব্যবস্থার যাত্রা। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র এত দিন মনে করত, সৌদি আরব বা সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হাতে রাখার মাধ্যমে আরব বিশ্বে ছড়ি ঘোরানো সহজ হবে। এ ক্ষেত্রে সত্যিকারের প্রতিদ্বন্দ্বীর অভাবও ছিল। কিন্তু চীন-ইরান দোস্তি হলে মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন বিশ্বশক্তির পা পড়বে। এতে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য খাতের পাশাপাশি সামরিক বিষয়েও চীনের প্রভাব বাড়বে। ইরানের বন্দরগুলোতে যদি চীনা প্রভাব বৃদ্ধি পায়, তবে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হবে।
চীন ও ইরানের সরকার এখনও এই চুক্তির বিস্তারিত কিছু ভেঙে বলছে না। তবে নিউইয়র্ক টাইমস ও হংকংভিত্তিক এশিয়া টাইমসসহ বেশ কিছু শীর্ষ সারির মিডিয়া বলছে, তারা ১৮-পাতার খসড়া চুক্তিটি দেখেছে।
এই চুক্তিসংক্রান্ত ১৮ পৃষ্ঠার একটি নথি ইন্টারনেটের দুনিয়ায় ফাঁস হয়ে গেছে। তাতে দেখা গেছে, ওই খসড়া প্রস্তাবটিতে জুন মাসের তারিখ উল্লেখ করা আছে। ইরানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর, এই খসড়া চুক্তির প্রস্তাবে এরই মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি সম্মতি জানিয়েছেন। এখন চুক্তিটি অনুমোদনের জন্য ইরানের পার্লামেন্টে তোলা হবে। সেখানে অনুমোদন পেলে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। তবে গত সপ্তাহে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ এই চুক্তির খসড়া তৈরির বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, এ নিয়ে চীনের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
সম্প্রতি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত নানা তথ্যের ভিত্তিতে যা জানা গেছে, ইরানের তেল-গ্যাস, ব্যাংকিং, টেলিকম, বন্দর উন্নয়ন, রেলওয়ে উন্নয়ন এবং আরও কয়েক ডজন খানেক গুরুত্বপূর্ণ খাতে চীন ব্যাপক বিনিয়োগ করবে। এই বিনিয়োগের পরিমাণ আগামী ২৫ বছরে কমপক্ষে ৪৪ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ হতে পারে।
সেই সঙ্গে প্রস্তাবিত চুক্তিতে সামরিক ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ‘যৌথ প্রশিক্ষণ, মহড়া, গবেষণা, যুদ্ধাস্ত্র তৈরি এবং গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানের’ কথা রয়েছে। চুক্তির আওতায় চীন তাদের বিনিয়োগের সুরক্ষায় ইরানে পাঁচ হাজার পর্যন্ত সৈন্য মোতায়েন করতে পারবে।
সুতরাং, এ চুক্তি সই হলে মধ্যপ্রাচ্যে এই প্রথম সরাসরি চীনা সামরিক উপস্থিতির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
ইরান জ্বালানি কেনার ক্ষেত্রে চীনকে বিনিয়োগের বদলে অনেক ছাড় দেবে । বাজারমূল্যের চেয়ে অনেক কমমূল্যে তেল-গ্যাস পাবে চীন এবং চীনা মুদ্রায় সেই দাম পরিশোধ করতে পারবে। মিডিয়ায় ফাঁস হওয়া চুক্তির এসব শর্ত নিয়ে ইরান বা চীন সরকারের পক্ষ থেকে খোলাসা করে কিছু বলা হয়নি।
তবে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস মুসাভি বলেন, চীনের সঙ্গে প্রস্তাবিত এই চুক্তি ইরানের কূটনীতির জন্য গর্ব করার মতো একটি অধ্যায়।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech