মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে চলছে উত্তেজনার পারদ

প্রকাশিত: ৯:২৯ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২০

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে চলছে উত্তেজনার পারদ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক::  করোনা-ত্রাসের আবহে একটা সময়ে ভোট পিছিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, জনপ্রিয়তার নিরিখে প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট পদপ্রার্থী জো বাইডেনের থেকে পিছিয়ে থাকার কারণেই চাপে পড়ে এমন প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তাঁর সেই প্রস্তাবে আমল দেয়নি বিরোধী শিবির। ভোট হচ্ছে নির্ধারিত ৩ নভেম্বরেই। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, অতিমারি-আবহে এবার অন্তত ৫ কোটি মার্কিন নাগরিক ডাক-যোগে ব্যালট পেপারে ভোট দেবেন। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পদ্ধতি একেবারেই আলাদা। জনগণের সরাসরি বা প্রত্যক্ষ ভোটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন না। ইলেকটোরাল কলেজ নামে পরিচিত এক দল কর্মকর্তাদের পরোক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
‘কলেজ’ শব্দটি বলতে একদল লোককে বোঝায় যারা নির্বাচকের ভূমিকা পালন করেন। তাদের সবার কাজ প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা। প্রত্যেক চার বছর অন্তর অন্তর, নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ পরে ইলেকটোরাল কলেজের নির্বাচকরা একত্রিত হন তাদের দায়িত্ব পালন করার জন্য। প্রার্থীদের মধ্যে সারা দেশে যিনি সবচেয়ে বেশি ভোট পান ইলেকটোরাল কলেজ তাকেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচন করে থাকে। কিন্তু সবসময় যে ঠিক এরকম হয় তা নয়। সমীক্ষা বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের থেকে দৌড়ে এগিয়ে আছেন জো বাইডেন। এপ্রিলের নিরিখে বাইডেনের জনপ্রিয়তা খানিক কমলেও, এখনও তিনি ট্রাম্পের চেয়ে প্রায় আট পয়েন্টে এগিয়ে। তাই ক্রমশ স্নায়ুর চাপ বাড়ছে প্রসিডেন্টের। দৌড়ে এগিয়ে থাকলেও তার মানে এই নয় যে মসনদে বসবেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেন। ফল বেরোনোর পর বদলে যেতে পারে হিসেবে নিকেশ। ২০১৬-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ে একইভাবে লিড নিয়েছিলেন হিলারি ক্লিনটন, পরে দেখা যায় ইলেকটোরাল কলেজ- এর ভোটে তিনি হেরে যান। গত পাঁচটি নির্বাচনের মধ্যে দুটোতেই কম পপুলার ভোট পেয়েও ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জর্জ বুশ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।সর্বশেষ ২০১৬ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের চেয়ে প্রায় ৩০ লাখ কম পপুলার ভোট পেয়েও হোয়াইট হাউসের দখল নেন । ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতিতে প্রত্যেকটি রাজ্যের হাতে থাকে কিছু ভোট। কোন রাজ্যের কত জন ইলেকটোরাল বা নির্বাচক থাকবেন সেটা নির্ভর করে ওই রাজ্যের জনসংখ্যার ওপর। সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে। ফলে এই রাজ্যে ইলেকটোরের সংখ্যা সর্বোচ্চ, ৫৫। ছোট ছোট কিছু রাজ্য এবং ডিস্ট্রিক্ট অফ কলাম্বিয়ার আছে তিনটি করে ভোট। আলাস্কা এবং নর্থ ড্যাকোটা রাজ্যের হাতেও তিনটি করে ভোট।প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন প্রার্থীরা সারা দেশে ভোটারদের কাছ থেকে যেসব ভোট পান সেগুলোকে বলা হয় পপুলার ভোট এবং ইলেকটোরাল কলেজের ভোটকে বলা হয় ইলেকটোরাল ভোট। এ বারের ভোটেও বাইরের দেশের হস্তক্ষেপের আশঙ্কা থাকছেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।নির্বাচনী সুরক্ষা দফতরের শীর্ষ আধিকারিক বিল ইভানিয়া জানান , ‘‘আমেরিকার ভোটে হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে রাশিয়া, চীন কিংবা ইরানের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে আমরা অত্যন্ত চিন্তিত।’’ বিশেষত নির্বাচনের দিনে সাইবার হামলা বা ভোট-হ্যাকিংয়ের আশঙ্কাও করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁর মতে , অনেকে হয়তো ভোটই দিতে পারবেন না। এখন দেখার শেষ পর্যন্ত সাদা বাড়ির দখল কে নেয়।

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ