সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ: পূর্নাঙ্গ কমিটিবিহীন বছর পার

প্রকাশিত: ১২:২৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৬, ২০২০

সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ: পূর্নাঙ্গ কমিটিবিহীন বছর পার

ডায়ালসিলেট::

সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার এক বছর পূর্ণ হয়েছে। দীর্ঘ এ সময়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি আলোর মুখ দেখেনি। ফলে তৃণমূলে বাড়ছে ক্ষোভ ও হতাশা।

গেল বছরের ৫ ডিসেম্বর সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে সম্মেলনের মাধ্যমে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন এডভোকেট লুৎফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান। আর মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়া এডভোকেট লুৎফর রহমান সর্বশেষ কমিটির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ও এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। মহানগরের সভাপতি তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও অধ্যাপক জাকির হোসেন মহানগর কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদক ঘোষণার প্রায় এক বছর কেটে যাচ্ছে। এক বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেননি শীর্ষ এ দুই নেতা। যার ফলে ব্যর্থতা ও সফলতা দুটাই ঘুরপাক খাচ্ছে তাদের মাঝে। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে।

এক পক্ষ অভ্যন্তরীন বিরোধ ও গ্রæপিং দ্ব›েদ্ব জড়িয়ে পড়েন। এরপরও থেমে নেই জেলা আ’লীগের কার্যক্রম। করোনাকালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. নাসির উদ্দিন খানের নেতৃত্বে অসহায়দের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। অসহায়দের মাঝে ত্রাণ, নগদ অর্থ বিতরণের পাশাপাশি দলের মধ্যে যেসব নেতাকর্মীরা অথনৈতিকভাবে দুর্বল তাদেরকেও সহযোগিতা করেন নাসির।
তার নির্দেশে সিলেট জেলার প্রতিটি উপজেলায়ও অসহায়দের পাশে দাঁড়ান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা কমিটি গঠনের পর উপজেলা পর্যায়ে কোন্দল নিরসনে নেমে পড়েন নাসির উদ্দিন খান। জন্মগত সময় থেকে বিশ^নাথ, ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ উপজেলায় নেতাকর্মীরা দুই বলয়ে বিভক্ত। তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করতে দফায় দফায় সভা করেন নাসির। তাদের মতবিরোধ দূর করে মতনৈক্য গড়ে তুলেন। এরপর থেকে এ তিন উপজেলায় আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ।

শুধু তাই নয়। এ দুই খলিফায় কাঁধে দায়িত্ব আসার পরই চলে আসে মুজিববর্ষ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করতে থাকে জেলা আওয়ামী লীগ। পুরো এক বছরের কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়। কয়েকটি কর্মসুচী সফলভাবে পালনও করে জেলা আওয়ামী লীগ। পরে মহামারি করোনা হানা দিয়ে দেশ ও জাতির কথা চিন্তা করে কর্মসূচী স্থগিত করা হয়।

এদিকে মহানগর আওয়ামী লীগও সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে একবছর পার করেছে। ওয়ার্ড পর্যায়ে কোন কোন্দল না থাকলেও মহানগর আওয়ামী লীগের মতবিরোধ রয়েছে। যার বহি:প্রকাশ ঘটে কেন্দ্রে দেয়া পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকায়।

তারাও করোনাকালে মহানগরে অসহায়দের মাঝে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, খাবার বিতরণসহ নানা কর্মসুচী পালন করেছেন। মুজিববর্ষ উপলক্ষে জেলার সাথে একত্রিত হয়ে কর্মসুচী পালন করেছেন।

এ ব্যাপারে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. নাসির উদ্দিন খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছিলেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করেছি। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েই দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল, মতবিরোধ নিরসনে কাজ করে তৃণমুল নেতাকর্মীদের মাঝে ঐক্যবদ্ধ করে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি।

পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে তিনি বলেন, কেন্দ্রে তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই কমিটি চলে আসবে।

কমিটির অভ্যন্তরে দ্ব›দ্ব নিয়ে নাসির উদ্দিন খান বলেন, আওয়ামী লীগ এশিয়া মহাদেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল। তাই মতবিরোধ থাকতে পারে কিন্তু কোন বিদ্রোহী নেই। সবাই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবে কাজ করে যাচ্ছেন।

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা কেন্দ্রে জমা দেওয়া হয়েছে। যেকোন সময় কমিটি আসতে পারে। আশা করছি ডিসেম্বরের মধ্যেই কমিটি আসবে।

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ