৪০০ কোটি টাকার স্বর্ণ নিয়ে বিপাকে কাস্টমস

প্রকাশিত: ১০:০৭ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৩, ২০২১

৪০০ কোটি টাকার স্বর্ণ নিয়ে বিপাকে কাস্টমস

ডায়ালসিলেট ডেস্ক:: বাংলাদেশ ব্যাংক ৬০০ কেজি ওজনের প্রায় ৪০০ কোটি টাকার স্বর্ণ না নেয়ায় বিপাকে রয়েছে ঢাকা কাস্টমস হাউস। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে স্বর্ণ পাচার করার সময় ঢাকা কাস্টমস ও শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ তা জব্দ করে। পরে ওই স্বর্ণগুলো বিমানবন্দরের গুদামে পাঠিয়ে দেয়া হয়। প্রায় ৩ বছর ধরে এই স্বর্ণ গুদামে পড়ে আছে। ওই স্বর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে ঢাকা কাস্টমস হাউস একাধিকবার চিঠি দিলেও তা তারা আমলে নেয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক স্বর্ণ না নেয়ার কারণ হিসেবে জানা গেছে যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ট্রেজারি রুল অনুযায়ী পরিত্যক্ত স্বর্ণ নিয়ে থাকে। সে স্বর্ণ স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে জমা হয়ে যায়। কেউ আর আবেদন করতে পারেন না। কোনো যাত্রীর সঙ্গে থাকা অবস্থায় জব্দকৃত স্বর্ণ তারা নিচ্ছে না।

এ ছাড়াও মামলার তদন্তের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা একাধিক স্বর্ণ আদালতে হাজির করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন। এ দুই কারণে স্বর্ণগুলো শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গুদামে পড়ে আছে। ৩ বছর ধরে সেগুলো পড়ে থাকার কারণে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ঢাকা কাস্টম হাউজের একাধিক কর্মকর্তা।

ঢাকা কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ‘বাংলাদেশ ব্যাংককে একাধিকবার বলা হয়েছে। তারা বিষয়টি আমলে নিয়েছে। তারা আইন সংশোধন করার জন্য সুপারিশ করেছে কর্তৃপক্ষের কাছে। এ নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে যে, দ্রুত বিষয়টির সুরাহা হবে।’

ঢাকা কাস্টমস হাউস ও শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সোনা পাচারের বড় রুট শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বহির্বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সরাসরি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যোগাযোগ হওয়ার কারণে এ রুটে বেশি সোনা পাচার করে থাকে সোনা চোরাকারবারিরা। তারা বিমানবন্দরের অসাধু কর্মকর্তা এবং ফ্লাইটের বিভিন্ন ক্রুদের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে সোনা পাচার করে। তবে ঢাকা কাস্টমস হাউস এবং শুল্ক গোয়েন্দা তদন্ত অধিদপ্তর ও এপিবিএনের কর্মকর্তারা আগাম গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে বড় বড় সোনার চালান ঠেকিয়ে দিয়ে চোরাকারবারিসহ সোনা জব্দ করে থাকে।
সূত্র জানায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে জব্দ হওয়া পরিত্যক্ত বা মালিকবিহীন অবস্থায় জব্দ করা সোনা বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থায়ীভাবে জমা হয়। পরে একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে তা নিলামে উঠে। নিলামে যা মূল্য পাওয়া যায় তা সরকারি কোষাগারে জমা হয়। তবে ব্যক্তিবিহীন উদ্ধার হওয়া সোনা বাংলাদেশ ব্যাংক নিচ্ছে না বলে জানা গেছে। ব্যক্তিসহ সোনা জব্দের ঘটনায় করা মামলা তদন্ত ও বিচারে দীর্ঘসূত্রতা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা একাধিকবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সোনার নমুনা নেয়া এবং তা আদালতে দাখিল করেন।
ঢাকা কাস্টমস হাউস সূত্রে জানা গেছে, সোনা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভোল্টে নেয়ার যে বড় সমস্যা রয়েছে তা পরিবর্তন করার জন্য এবং একটি স্থায়ী সুরাহা করার জন্য ঢাকা কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা আশ্বাস দিয়েছেন যে, এর একটি সমাধান তারা করবেন। যে রুলস আছে সেটি তারা পরিবর্তনের জন্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন।

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ