যুক্তরাজ্য প্রবাসী সালমার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ -সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত: ৭:৩৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৭, ২০২২

যুক্তরাজ্য প্রবাসী সালমার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ -সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

 

ডায়ালসিলেট ডেস্ক :: ‘সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মাইজগাঁও গ্রামের মোহাম্মদ আবুল বশরের মেয়ে সালমা করিম (৪৯)। যুক্তরাজ্য প্রবাসী। সেখানে বসবাস করে বিয়ের মাধ্যমে যুবকদের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পাইয়ে দেওয়ার আশায় একের পর প্রতারণা করে যাচ্ছেন। আবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর স্বামীদের বছরের পর বছর আর্থিকভাবে, মানসিকভাবে চাপের মধ্যে রাখছেন বিভিন্নভাবে। তিনি বিগত একযুগের মধ্যে অন্তত ৪টি বিয়ে করেছেন। ৪টি বিয়ের পর তিনি স্বামীদের সাথে ভয়ঙ্কর প্রতারণা করেছেন। তাদের বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদেরকে জিম্মি করে ব্রিটিশ অ্যাম্বেসি, ব্রিটিশ পুলিশের অভিযোগে ভয় দেখিয়ে ডিভোর্সে বাধ্য করেছেন।’

 

 

বুধবার (২৭ জুলাই) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে যুক্তরাজ্য প্রবাসী রাসেল আহমদের পক্ষে তার আপন বড় বোন মোছা. রেছনা বেগম সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন। হয়রানীর শিকার রাসেল আহমদও ভিডিও কনফারেন্সে যুক্তরাজ্য থেকে যুক্ত হয়ে নিজের অভিযোগ জানান। সালমার প্রতারণায় যাতে নতুন কোন যুবকের জীবন ক্ষতির সম্মুখে না পরে সেজন্য প্রবাসে বসবাসরতদের সতর্ক করেন রাসেল।

 

 

সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপাশা আম্বিয়া গ্রামের ফরিদ উল্লাহের ছেলে ইংল্যান্ড প্রবাসী যুবক রাসেল আহমদের পক্ষে তার আপন বড় বোন সিলেট নগরের খাসদবীর বন্ধন আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মোছা. রেছনা বেগম বলেন, ২০১৩ সালে ১৩ লক্ষ টাকা কাবিনের মাধ্যমে সালমার সাথে আমার ভাইয়ের বিয়ে হয়েছিল। এই বিয়ের আগে জনৈক আবদুল করিম নামে এক ব্যক্তির সাথে বিয়ে হয়েছে জানালেও খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে তিনি একাধিক বিয়ে করেছেন। যা সালমা গোপন করেছেন।

 

 

রাসেলের সাথে বিয়ের সময় তিনি নিজেকে তালাকপ্রাপ্ত দেখান। কিন্তু রাসেল দেশে যোগাযোগ করে জানতে পারেন ২০১১ সালে ফেঞ্চুগঞ্জের কটালপুর গ্রামের জনৈক নওশাদ মিয়ার সাথে তার সংসার চলমান। নওশাদ বিয়ে করেও তিনি ইংল্যান্ডে নিয়ে আসেননি। উল্টো তার কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। রাসেলের সাথে বিয়ের ৩ মাস পর নওশাদ মিয়াকে ডিভোর্স দেন সালমা করিম। যা ইসলামী শরিয়াহ পরিপন্থি।

লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, রাসেল দীর্ঘদিন ধরে ইংল্যান্ডে বসবাসরত। সালমার সাথে পরিচয়ের পর তিনি রাসেলকে জানান পূর্বের স্বামীর ঘরে তিনি নির্যাতিত। তিনি রাসেলকে নিয়ে সংসার করতে আগ্রহী। এমন আশ্বাসে এবং নাগরিকত্বের আশায় রাসেল বয়সে বড় সালমা করিমকে বিয়ে করেন।

 

বিয়ের কিছুদিন পরেই সালমার লোভী মনোভাব ও চরিত্রের নিন্দনীয় দিক উন্মোচিত হতে থাকে। তিনি পরকীয়ায় লিপ্ত ছিলেন। রাসেলের রোজগারের অর্থ নিজের কব্জায় নিয়ে রাখতেন। রাসেল প্রতিবাদ জানালে বাসায় তালাবদ্ধ করে রেখে সালমা পরপুরুষের সাথে চলে যেতেন। তিনি রাসেলকে সবসময় তালাকের ভয় দেখাতেন। পুলিশের কাছে নারী নির্যাতনের অভিযোগ করবেন, রাসেলকে ইংল্যান্ডছাড়া করাবেন- ভয় দেখাতেন। এতো অত্যাচার-নির্যাতনের পরও রাসেল সবকিছু নিরবে সহ্য করছিলেন।

 

তবুও রাসেলকে বিপদে ফেলতে এবং ইংল্যান্ড থেকে তাড়ানোর উদ্দেশ্যে সালমা করিম রাসেলকে ডিভোর্স দেন। সংসাররত অবস্থায় আমার ভাই বিবাহিত জীবনের সকল সঞ্চয় সালমা হাতে তুলে দিয়েছেন। কিন্তু তাতেও তার মন ভরেনি।

লিখিত বক্তব্যে রেছনা বেগম রাসেলের পক্ষে আরও দাবি করেন, বাংলাদেশ থেকে প্রচুর শিক্ষার্থী ইংল্যান্ডে যাচ্ছেন। এমনই এক শিক্ষার্থীকে সম্প্রতি প্রতারণার জালে ফেলতে চেষ্টা চালাচ্ছেন সালমা করিম। ওই শিক্ষার্থীকে বিয়ের মাধ্যমে ব্রিটেনের নাগরিকত্ব পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখাচ্ছেন সালমা।

 

 

রেছনা বেগম সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সালমা করিমের আরও অনেক কুকীর্তির কথা তুলে ধরেন। অনেক প্রতারণার কথা তুলে ধরে তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে ব্রিটেনে বাংলাদেশ হাই কমিশন এবং বাংলাদেশের ব্রিটিশ হাই কমিশনসহ দুই দেশের আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীসহ সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বিয়ে করাটাই সালমা করিমের মূল পেশায় পরিণত হয়েছে।

 

এমন ভয়ঙ্কর নারীর হাত থেকে ব্রিটেনে যাওয়া তরুণ ও যুবসমাজকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান রেছনা বেগম। সংবাদ সম্মেলনে কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে লিখিত বক্তব্যের প্রতিটি দাবির প্রতি সত্যতা জানান প্রবাসী রাসেল।

 

 

0Shares