মায়ের পাশেই চিরনিদ্রায় গাজী মাজহারুল আনোয়ার

প্রকাশিত: ১:০১ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২

মায়ের পাশেই চিরনিদ্রায় গাজী মাজহারুল আনোয়ার

বিনোদন ডেস্ক :: গাজী মাজহারুল আনোয়ার ছিলেন বাংলা গানের জন্য অনন্য এক আশীর্বাদ। গীতিকার কিংবা গীতিকবি শব্দটা শুনলেই সবার আগে দৃশ্যপটে ভেসে আসতো তার মুখটি! ছয় দশকের ক্যারিয়ারে অসংখ্য কালজয়ী গান উপহার দিয়েছেন তিনি। সেই মানুষটি পৃথিবীতে বিদায় জানিয়েছেন রবিবার।
সোমবার বাদ আসর গুলশানের আজাদ মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় গাজী মাজহারুল আনোয়ারের তৃতীয় জানাজা। এরপর তাকে বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় সমাহিত করা হয়। যে কবরে ঘুমিয়ে আছেন তার মা খোদেজা বেগম। যার পেটে জন্ম নিয়ে পৃথিবীর আলো দেখেছিলেন এই গীতিকবি। নিজের লেখা অসংখ্য কালজয়ী ও জনপ্রিয় গানের মাধ্যমে দেশের সংগীতাঙ্গনকে আলোকিত করেছিলেন তিনি। সেই আলোর মিছিল ছেড়ে চির অন্ধকার কবরে শায়িত হয়েছেন। যেখানে তার সঙ্গী মা।
এর আগে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে সোমবার সকাল ১০টায় গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মরদেহ নিয়ে আসা হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। এখানে তাকে দেয়া হয় রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ‘গার্ড অব অনার’। দেশের নানা স্তরের মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানান তাকে। শহীদ মিনার থেকে এই কিংবদন্তির মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বিএফডিসিতে। সেখানে প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। চলচ্চিত্রের শিল্পী ও কলাকুশলীরা তাকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
এরপর তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় চ্যানেল আইতে। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় জানাজা। জানাজা শেষ হতেই নামে তুমুল বৃষ্টি। প্রকৃতিও যেন কিছুতে মানতে পারছিল না এই গীত স্রষ্টার বিদায়! সে জন্যই হয়তো তার লাশের গাড়ি অঝোর বৃষ্টির পানিতে ভিজেছে। পাশে ভেতরে বসে কাঁদছিলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ারের স্ত্রী, ছেলে, মেয়েসহ অন্য আত্মীয়স্বজন এবং শুভাকাঙক্ষীরা।
চ্যানেল আই থেকে মরদেহ যায় গুলশানের আজাদ মসজিদে। বাদ আসর অনুষ্ঠিত হয় তার তৃতীয় জানাজা। এরপর নিয়ে যাওয়া হয় বনানী কবরস্থানে। অন্যন্যদের পাশাপাশি গাজী মাজহারুল আনোয়ারের দাফনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামও। গানের গাজীর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হলো বাংলাদেশের সংগীতের বিরাট এক অধ্যায়ের। তিনি চলে গেলেও তার হাজারও সৃষ্টি দেশের কোটি ভক্তের হৃদয়ে আজীবন বাজবে।
উল্লেখ্য, গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৪ সাল থেকে রেডিও পাকিস্তানে গান লেখা শুরু করেন তিনি। পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই নিয়মিত গান ও নাটক রচনা করেন তিনি। গানের পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণ ও চিত্রনাট্য রচনা করে সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। তার মৃত্যুতে দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

0Shares