প্রকাশিত: ১:৫৫ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৬, ২০২৩
ডায়ালসিলেট রিপোর্ট :: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-১ এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, বিচারককে প্রাণনাশের হুমকি, বিচারকাজে নগ্ন হস্তক্ষেপ, আদালতের কর্মচারীদের মারধর, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া, দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
এসময় তারা বিচারককে কোর্টে উঠতে দেয়া হবেনা বলে হুমকি প্রদর্শন করে সরকার সমর্থিত প্রভাবশালী আইনজীবীরা। তখন সবাই জজকে অকথ্যভাষায় চেয়ার থেকে নামার জন্য হুমকি প্রদর্শন করে।
এসময় উপস্থিত থাকা বেশ কয়েকজন পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করেন। পরে বিচারক তার আত্নসম্মানার্থে এজলাস ত্যাগ করেন।
এরই প্রতিবাদে বুধবার (০৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আদালতে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এতে আদালতের বিভিন্ন প্রবেশ দ্বারে তালা ঝুলিয়ে জেলা জজ কোর্ট প্রাঙ্গণে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি পালন করে বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, মূলত গেল গত ১ ডিসেম্বর একটি মামলা দায়েরকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের আইনজীবী সমিতির নেতাসহ একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এসময় একটি ভিডিও ফুটেজে আইনজীবীরা বিচারককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও তাকে বাইরে বেড়িয়ে আসার এবং তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয় তারা।
এর আগে সময় পার হয়ে যাওয়ায় নিয়ম অনুসারে মামলাটি নিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হন আইনজীবীরা। এ ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর সভা করে ১ জানুয়ারি থেকে সংশ্লিষ্ট আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা আইনজীবী সমিতি। এ ঘটনায় আদালতে কর্মরত কর্মচারীদের মধ্যেও বিরূপ প্রভাব দেখা দেয়। তারা আইনজীবীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে মঙ্গলবার বিচারবিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন সভা করে বুধবার থেকে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেয়।
এদিকে মানববন্ধন চলাকালে কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি কাজী উজ্জ্বল ইসলাম বলেন, বিচার কাজে নগ্ন হস্তক্ষেপ, এজলাশে ঢুকে নথি ছিনিয়ে নেওয়া, কর্মচারীদের মারধর করার প্রতিবাদে কয়েকজন আইনজীবীর বিরুদ্ধে আমরা এ মানববন্ধন ও কর্মবিরতি পালন করেছি।
এদিকে সকালে শত শত আইনজীবী আদালত প্রাঙ্গণে এসে বিচারবিভাগীয় কর্মচারীদের মানববন্ধন ও কর্মবিরতি পালন দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন। এসময় শত শত আইনজীবী জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন ভবনের সামনে জড়ো হয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয় ব্যক্ত করতে থাকেন। একপর্যায়ে আইনজীবীরা আদালত প্রাঙ্গণে জেলা জজ শারমিন নিগারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আইনজীবী তানভীর ভূঁইয়া বিচার বিভাগীয় কর্মচারী ইউনিয়নের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমরা আইনমন্ত্রী ও আইন সচিবের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এখনো কোনো কর্মসূচি দেইনি। পরিস্থিতি ঘোলাটে করা হলে জেলা জজের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আদালত বর্জন করতে বাধ্য হব।
তাদের অভিযোগগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট। মূলত জাল স্ট্যাম্প, জালিয়াতির উৎস ও চাঁদাবাজি বন্ধ করে দেওয়ায় ঘুষখোর ও ঘুষখোরের মদদদাতা আদলতের নাজির মুমিনকে রক্ষায় এ কর্মসূচি পালন করছেন আদালতের কর্মচারীরা।
এদিকে সন্ধ্যায় জেলা আইনজীবী সমিতির লাইব্রেরি রুমে এক জরুরি সভা করে জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ জেলা জজ শারমিন নিগার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-১ এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুক ও আদালতের নাজির মোমিনুল হকের অপসারণের দাবিতে তিনদিনের জন্য সব কোর্ট বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুল।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech