দূর্যোগ মোকাবেলায় সিসিকে ‘জরুরি পরিচালন কেন্দ্র’

প্রকাশিত: ২:৫৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩

দূর্যোগ মোকাবেলায় সিসিকে ‘জরুরি পরিচালন কেন্দ্র’

ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: দূর্যোগ মোকাবেলায় ‘জরুরি পরিচালন কেন্দ্র’ (ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার) উদ্বোধন করেছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সোমবার দুপুরে নগর ভবনের ৬ষ্ট তলায় বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে আরবান রেজিলেন্স প্রকল্পে স্থাপিত নগর ভবনে ৬ষ্ঠ তলায় ‘জরুরি পরিচালন কেন্দ্র’ উদ্বোধন করা হয়। প্রকল্পের আওতায় দূর্যোগ মোকাবেলায় যন্ত্রপাতিও প্রদান করা হয়।

 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, দূর্যোগ মোকাবেলায় উদ্ধার কাজ ও সহায়তা প্রদান কার্যক্রমে ‘জরুরি পরিচালন কেন্দ্র’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। যেকোনো দূর্যোগে সবধরনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও প্রযুক্তিনির্ভর এই কেন্দ্রটি সচল থাকবে। এখান থেকে সরকারের সাথে যোগযোগ, উদ্ধারকারী সংস্থাসমূহের সাথে সমন্বয় করা যাবে।

 

তিনি বলেন, এই কেন্দ্রের মাধ্যমে সিসিকের একটি সেন্ট্রাল ডাটাবেজ তৈরি হয়েছে। এখন থেকে এক ক্লিকেরই গোটা নগরের সকল ধরণের তথ্য, সেবা ও উন্নয়ন কাজের অগ্রগতির তথ্য পাওয়া যাবে। ফলে আরো স্বচ্ছ ও নির্ভুলভাবে কাজ করতে পারবে সিলেট সিটি করপোরেশন।

 

সিসিকের তথ্য কর্মকর্তা ও সহকারী প্রকৌশলী জয়দেব বিশ্বাসের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রকল্প পরিচালক ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান। অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন সিটি করপোরেশন জামে মসজিদের ইমাম হাফিজ মোহাম্মদ আলী।

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলে সিলেট নগরের বেশিরভাগ বাসাবাড়ি-ভবন ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে বলে ধারণা বিশেজ্ঞদের। এমন পরিস্থিতিতেও সহনীয় সিলেট সিটি করপোরেশন ভবনে স্থাপিত দূর্যোগ মোকাবেলায় ‘জরুরি পরিচালন কেন্দ্র’টি সচল থাকবে। দূর্যোগকালীন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার নাগরিকদের সাথে দ্রুত যোগাযোগ স্থাপনের জন্য এই কেন্দ্রটি কাজ করবে।

 

দূর্যোগকালীন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা ও উদ্ধার কাজ পরিচালনায় সেবা প্রদানকারীদের সাথে জরুরি যোগাযোগ স্থাপন করা যাবে এখান থেকে। এই কেন্দ্রে স্থাপিত ইমার্জেন্সি কল সেন্টার থেকে এক সাথে ৩০টি কল গ্রহণ করা যাবে। এছাড়া এখানে যোগাযোগের মাধ্যমে তথ্য সরবরাহসহ উদ্ধার কাজের যাবতীয় তথ্যাদি এই কেন্দ্রে সংরক্ষণ করা হবে।

এই কেন্দ্রে স্থাপিত ডাটাবেসে সিলেট সিটি করপোরেশনের সম্পদ ও সেবা সংক্রান্ত সকল তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। সিসিকের সকল বিভাগ ও শাখার সেবা ও উন্নয়ন সংক্রান্ত তথ্য ভাণ্ডার করা হয়েছে এই প্রকল্পে।

 

এ প্রকল্পে ‘জিআইএস’ প্রযুক্তির মাধ্যমে সিসিকের ২৭ ওয়ার্ডের ম্যাপ ও তথ্য সংরক্ষণ, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন এবং জিআইএস পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে। যার মাধ্যমে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন যেকোনো দূর্যোগ এলাকা থেকে সিসিকের নির্ধারিত কর্মী বা স্বেচ্ছাসেবকগণ পোর্টালে সরাসরি রিপোর্ট করতে পারবেন। দূর্যোগ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সেবা সংক্রান্ত লজিস্টিক সাপোর্ট সম্পর্কিত তথ্য জানা যাবে এই পোর্টালে।

 

দূর্যোগ কবলিত এলাকাসমূহে যদি সবধরণের যোগযোগ বন্ধ হয়ে যায়, দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ যদি কোনো ধরণের যোগাযোগ করতে না পারেন সেক্ষেত্রে এই কেন্দ্র থেকে উদ্ধার কাজ পচিালনায় নিয়োজিত সেবা প্রদানকারী সংস্থাসমূহের সাথে স্যাটেলাইট সংযোগের মাধ্যমে জরুরি তথ্য সেবা প্রদান করা যাবে। এছাড়া স্যাটেলাইটে পুরো এলাকার ভিডিও চিত্র দেখা যাবে। স্যাটেলাইট চিত্র দেখে উদ্ধারকারীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা যাবে এখান থেকে।

 

এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে দূর্যোগে সহায়তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে বা অন্য এলাকার সাহায্যকারীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা যাবে। ‘ডিএমআর’ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সিসিকের নিয়মিত সেবা ও কাজের অগ্রগতি ট্রেকিং করা যাবে। দূর্যোগকালীন সময়ে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে গেলেও সিসিকের ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ‘ডিএমআর নেটওয়ার্ক’ সচল থাকবে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।

 

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর মোহাম্মদ তৌফিক বকস, প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, প্রকল্প পরিচালক ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান ও সাংবাদিক মুহিত চৌধুরী।

 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর শান্তনু দত্ত সন্তু, কাউন্সিলর মো. আজাদুর রহমান আজাদ, কাউন্সিলর রেজাউল হাসান লোদী, কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান, কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদ, কাউন্সিলর এবিএম জিল্লুর রহমান, কাউন্সিলর রাশেদ আহমদ, কাউন্সিলর আব্দুল মুহিত জাবেদ, কাউন্সিলর মো. আব্দুল মুনিম, সংরক্ষিত কাউন্সিলর রেবেকা সুলতানা, সংরক্ষিত কাউন্সিলর নাজনিন আকতার কণা, সংরক্ষিত কাউন্সিলর রেবেকা আক্তার, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ফাহিমা ইয়াসমিন, সিসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আলম, নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান, লাইসেন্স কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান, বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা আবুল ফজল খোকন, জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুল আলিম শাহসহ সিসিকের বিভিন্ন বিভাগ ও শাখার কর্মকর্তাবৃন্দ।

 

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ