বিশ্ব খাদ্য দিবস আজ

প্রকাশিত: ৪:৫১ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০২৩

বিশ্ব খাদ্য দিবস আজ

ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: আজ ১৬ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য দিবস। কৃষি মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার উদ্যোগে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচিতে পালিত হবে দিবসটি। এবারের প্রতিপাদ্য ‘পানি জীবন, পানিই খাদ্য। কেউ থাকবে না পিছিয়ে।’

 

আজ সোমবার সকাল ১০টায় বিশ্ব খাদ্য দিবসের মূল অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার প্রধান অতিথি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শম রেজাউল করিম বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। দুপুরে বন্যা ও পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে কারিগরি সেশন অনুষ্ঠিত হবে।

 

এদিকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেখা যায়, বিগত ১৫ বছরে খাদ্য উৎপাদনে বিস্ময়কর সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে বিগত ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার দেশের কৃষির উন্নয়নে ধারাবাহিকভাবে নানাবিধ যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। কৃষি গবেষণা-সম্প্রসারণকে কার্যকর সংযোগ স্থাপন, ন্যায্যমূল্যে কৃষি উপকরণ কৃষকের নিকট সহজলভ্য করা এবং কৃষি গবেষণায় বিনিয়োগ বাড়ানোই ফসলের নতুন নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়। ফলে কৃষি ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়। আধুনিক, লাভজনক ও যান্ত্রিক কৃষি ব্যবস্থার প্রবর্তন হয়। উচ্চ ফলনশীল ও প্রতিকূলতা সহিষ্ণু নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন ও প্রবর্তনের ফলে খাদ্যশস্য, সবজি ও ফল উৎপাদনে বৈচিত্র্য এসেছে এবং ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করে।

 

খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পর উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। ২০০৮-০৯ সালে যেখানে মোট খাদ্যশস্য উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ২৮ লক্ষ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন, সেখানে ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে ৪ কোটি ৭৭ লক্ষ ৬৮ হাজার মেট্রিক টন হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য ফসলের উৎপাদনও ধারাবাহিক সাফল্য অর্জিত হয়েছে।

 

বিগত ১৫ বছরে ভুট্টা উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে প্রায় ৯ গুণ, আলু ২ গুণ, ডাল ৪ গুণ, তেলবীজ ২.৫ গুণ ও সবজি ৮ গুণ। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের কৃষির সাফল্য বিশ্বে সমাদৃত হয়েছে। বাংলাদেশের ২২টি কৃষিপণ্য উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে রয়েছে; যেমন, ধান উৎপাদনে ৩য়, সবজি ও পেঁয়াজ উৎপাদনে ৩য়, পাট উৎপাদনে ২য়, চা উৎপাদনে ৪র্থ এবং আলু ও আম উৎপাদনে ৭ম।

 

২০০৮-০৯ সালে চালের উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ১৩ লাখ টন যা ২০২২-২৩ সালে ৪ কোটি টনেরও বেশিতে উন্নীত হয়েছে। ২০০৮-০৯ সালে গমের উৎপাদন ছিল ৮ লাখ ৪৯ হাজার টন ২০২২-২৩ সালে ১১ লাখ ৭০ হাজার টন, ভুট্টা ছিল ৭ লাখ টন যা এখন ৬৪ লাখ টন, আলু ৫ লাখ টন থেকে বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ, সবজি ৩০ লাখ টন থেকে বেড়ে হয়েছে ২ কোটি ২০ লাখ টন।

বিগত ১৫ বছরে বৈরী পরিবেশ সহনশীল জাতসহ মোট ৬৯৯ টি উন্নত/উচ্চ ফলনশীল জাতের ফসল উদ্ভাবন ও ৭০৮ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর মধ্যে ধানের জাত ৮০টি।

 

সরকার কয়েক দফায় সারের মূল্য কমিয়ে ও সমন্বয় করে টিএসপি ৮০ টাকা থেকে ২৭ টাকা, ডিএপি ৯০ টাকা থেকে ২১ টাকা এবং এমওপি ৭০ টাকা থেকে ২০ টাকা করা হয়। এছাড়াও ভর্তুকি মূল্যে প্রতি কেজি ইউরিয়া ২৭ টাকা দরে কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করা হয়েছে।

 

২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত সার, বিদ্যুৎ ইত্যাদি খাতে মোট ১ লাখ ২৮ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে এ খাতে ব্যয় ছিল মাত্র ৫ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভর্তুকি বাবদ ২৫ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে।

 

সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী খামার যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে কৃষিকে আধুনিকায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। কৃষকদের কৃষিযন্ত্রের ক্রয়মূল্যের উপর হাওর ও উপকূলীয় এলাকায় ৭০% ও অন্যান্য এলাকায় ৫০% উন্নয়ন সহায়তার মাধ্যমে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হচ্ছে। ২০১০ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত কম্বাইন্ড হারভেস্টর, রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার, রিপার, সিডার ও পাওয়ার থ্রেসারসহ প্রায় ১ লাখ ৩৩ হাজারটি কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে। এর ফলে কৃষি শ্রমিকের অপ্রতুলতা মোকাবিলা এবং উৎপাদন ব্যয় হ্রাস হয়েছে।

 

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ