প্রকাশিত: ৩:৫৪ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৪
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: পূর্ব এশিয়ার দেশ জাপানের পর এবার মন্দায় আক্রান্ত হয়েছে ইউরোপের দেশ ব্রিটেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধে দেশটির অর্থনীতি মন্দায় পতিত হয়। ডলারের বিপরীতে ব্রিটিশ মুদ্রা পাউন্ড স্টার্লিংয়ের দুর্বল অবস্থান, সুদহার কমানোসহ বেশ কয়েকটি কারণেই এ অবস্থা বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
ব্রিটিশ সরকারের তথ্য-উপাত্তের বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্রিটেনের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি কমেছে প্রায় দশমিক ৩ শতাংশ। তার আগে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে কমেছে দশমিক ১ শতাংশ।
রয়টার্সের হিসাব বলছে, চলতি প্রান্তিক তো বটেই টানা চতুর্থ প্রান্তিকেও (এপ্রিল-জুন) ব্রিটেনের জিডিপি কমতে থাকবে। রয়টার্সের হিসাব বলছে, এ সময়ে ব্রিটিশ অর্থনীতি দশমিক ১ শতাংশ হারে কমবে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ডলার ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুদ্রা ইউরোর বিপরীতে ব্রিটিশ পাউন্ড স্টার্লিংয়ের মান কমা, চলতি বছরে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সুদহার কমানো এবং ব্যবসা খাতে বিনিয়োগকারীরা সরকারের কাছ থেকে অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধার আবেদনসহ নানা পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির অর্থনীতিকে এই সংকোচন চলছে।
এদিকে, ব্রিটেনসহ বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭-এর মন্দাক্রান্ত দেশের সংখ্যা এখন দুই। অপর দেশটি হলো জাপান। গত বছরের শেষ দিকে আকস্মিকভাবে মন্দায় পড়ে যায় জাপান, যার কারণে দেশটির জিডিপি বেশ সংকুচিত হয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানের অর্থনীতি চলতি প্রান্তিকেও আরও খাদে পড়তে পারে। বিশেষ করে চীনে জাপানি পণ্যের কম চাহিদা, দেশের অভ্যন্তরে ভোগ কম এবং টয়োটার মতো প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন হ্রাসের কারণে বিষয়টি ঘটবে।
জাপানের অর্থনীতি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান দাই-ইচি লাইফ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ইয়োশিকি শিনকে বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে লক্ষণীয় হলো ভোগ ও মূলধন ব্যয়ের মন্থর গতি, যা অভ্যন্তরীণ চাহিদার মূল স্তম্ভ।’ তিনি আরও বলেন, ‘আর প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি ছাড়া আপাতত অর্থনীতিতে মন্থর গতি অব্যাহত থাকবে।’
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার জাপানের সরকারি তথ্য থেকে দেখা গেছে, জাপানের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি গত বছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। তার আগের প্রান্তিকে জাপানের জিপিডি কমেছিল ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। বিশ্লেষকেরা টানা দুই প্রান্তিকে কোনো দেশের জিডিপি কমে যাওয়াকে মন্দা হিসেবেই বিবেচনা করেন।
তবে টানা দুই প্রান্তিকে কমলেও জাপানের জিডিপি ২০২৩ সালে ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ জাপানের মোট জিডিপির পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি ডলার বা ৪ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার। কিন্তু গত জানুয়ারির শেষ দিকে প্রকাশিত তথ্য-উপাত্ত থেকে দেখা যাচ্ছে, জার্মানির জিডিপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি ডলার বা ৪ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে।
জাপানের অর্থনীতির পতনের পেছনে প্রাথমিকভাবে ডলারের বিপরীতে ইয়েনের তীব্র দরপতন অন্যতম কারণ। ২০২২-২৩ সালে ডলারের বিপরীতে প্রায় জাপানি মুদ্রার মান এক-পঞ্চমাংশ কমে গিয়েছিল। অপর একটি কারণ হলো ব্যাংক অব জাপানের নেতিবাচক সুদের হার বজায় রাখা। এ অবস্থায় দেশটির ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ঋণ গ্রহণের খরচ বাড়িয়েছে।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech