জানাযার নিয়ত, ছানা, দরূদ ও দোয়া করার নিয়ম

প্রকাশিত: ৮:০৮ পূর্বাহ্ণ, মে ১০, ২০২৪

জানাযার  নিয়ত, ছানা, দরূদ ও দোয়া করার নিয়ম

ডায়ালসিলেট ডেস্ক ::  জানাযার নামাজ আদায় করা ফরজে কিফায়া। কোন মুসলমান ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তখন ফরজ নামাজ আদায় শেষে জানাযার নামাজ আদায় করা হয়। জানাযার নামাজ সব সময় না পড়ার কারণে অনেকেই জানাযার নিয়ম, নিয়ত, ছানা, দরূদ ও দোয়া ভুলে যায়।

মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করার গুরুত্বপূর্ণ দোয়াগুলো হলো।

জানাযার নিয়ত এবং প্রথম তাকবিরের পর ছানা

নিয়ত :

আমিন জানাযার ফরজে কিফায়া নামাজ চার তাকবিরের সাথে ক্বিবলামুখী হয়ে ইমামের পিছনে দাঁড়িয়ে মৃত ব্যক্তির (পুরুষ/মহিলা) জন্য দোয়া করার উদ্দেশ্যে আদায় করছি। আল্লাহু আকবার।

ইমাম মৃত ব্যক্তি পুরুষ কিনা মহিলা জানিয়ে দিবেন। সে মতে প্রত্যেক মুসল্লী নিয়ত করার সময় বলে নিবে মৃত ব্যক্তির জন্য (পুরুষ/মহিলা) দোয়া উল্লেখ করে নিবে।

 

প্রথম তাকবিরের পর ছানা :
আল্লাহু আকবার বলে উভয় হাত কাঁধ অথবা কানের লতি পর্যন্ত উঠিয়ে নিয়ত বাঁধার পর এ ছানাটি পড়বে-

سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ وَجَلَّ ثَنَاءُكَ وَلاَ اِلَهَ غَيْرُكَ-

উচ্চারণ : সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা ঝাদ্দুকা ওয়া ঝাল্লা ছানাউকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।

অর্থ : হে আল্লাহ! সকল প্রশংসা আপনার। আপনি সব ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতি হতে পবিত্র। আপনার নাম মঙ্গল ও বরকতপূর্ণ, আপনার মহত্ত্ব অতি বিরাট, আপনার প্রশংসা অতি মহত্ত্বপূর্ণ এবং একমাত্র আপনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই।

 

 

সানা পড়ার পর তাকবির বলে নামাজে পঠিতব্য দরুদ শরিফ পড়বে। দরুদ শরিফ হলো—

اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَّعَلى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدُ، اَللّهُمَّ بَارِكْ عَلى مُحَمَّدٍ وَّعَلى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ

বাংলা উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিউ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহিমা ওয়া আলা আলি ইবরাহিমা, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিউ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারাকতা আলা ইবরাহিমা ওয়া আলা আলি ইবরাহিমা ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।’

বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ (সা.) ও তাঁর পরিবারবর্গের ওপর শান্তি বর্ষণ করো, যেভাবে ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর পরিবারবর্গের ওপর শান্তি বর্ষণ করেছিলেন। নিশ্চয়ই তুমি অতি প্রশংসিত মহিমান্বিত। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ (সা.) ও তাঁর পরিবারবর্গের ওপর বরকত দান করো, যেভাবে ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর পরিবারবর্গের ওপর বরকত দান করেছিলেন। নিশ্চয়ই তুমি অতি প্রশংসিত মহিমান্বিত।’ (নাসায়ি, হাদিস: ১২৯১)

 

 

এরপর তাকবির বলে দোয়া পড়বে। মৃত যদি নাবালক পুরুষ বা নারী হয়, তাহলে এই দোয়াটি পড়া—

اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَذَكَرِنَا وَاُنْثَنَا اَللّٰهُمَّ مَنْ اَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَاَحْيِهِ عَلٰى الْاِسْلاَمِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلٰى الْاِيْمَانِ

বাংলা উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মাগ ফিরলি হাইয়িনা ওয়া মাইয়িতিনা, ওয়া শাহিদিনা ওয়াগা ইবিনা, ওয়া সাগিরিনা ওয়া কাবিরিনা, ওয়াজাকারিনা ওয়া উংসানা। আল্লাহুম্মা মান আহইয়াইতাহু মিন্না ফাআহ ইহি আলাল ইসলাম, ওয়া মান তাওয়াফফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফফাহু আলাল ঈমান।’

বাংলা উচ্চারণ: হে আল্লাহ! আমাদের জীবিত এবং মৃতদের, উপস্থিত এবং অনুপস্থিতদের, ছোট এবং বড়দের এবং আমাদের নারী-পুরুষ সবাইকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের মধ্য থেকে যাকে জীবিত রাখবেন, তাকে ইসলামের ওপরই জীবিত রাখুন। যাকে মৃত্যু দান করবেন তাকে ঈমানের সঙ্গেই মৃত্যু দিন। (তিরমিজি, হাদিস: ৯৪৫)

 

 

চতুর্থ তাকবিরের পর সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হবে। প্রথম তাকবির ছাড়া অন্য কোনো তাকবিরের সময় হাত ওঠানো যাবে না, হাত ছাড়াও যাবে না। এই চার তাকবির বলা জরুরি। একটি না বললেও নামাজ শুদ্ধ হবে না। (সুনানে কুবরা, হাদিস: ৭২৩৮, আল আযকার, ইমাম নববি, পৃষ্ঠা: ৩৬৭) উল্লিখিত সব দোয়া ধীরে ধীরে পড়তে হবে।

 

0Shares