এমন সহিংস আন্দোলন গত কয়েক দশকে দেখা যায়নি

প্রকাশিত: ৯:০৭ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২১, ২০২৪

এমন সহিংস আন্দোলন গত কয়েক দশকে দেখা যায়নি

সোহেল আহমদ :: বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রায় ১৩০ জনের মত প্রাণহানি হয়েছে ৷ এমন সহিংস আন্দোলন গত কয়েক দশকে দেখা যায়নি৷ যতদিন পাড় হচ্ছে বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংস রূপ নিয়েছে ৷ নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া অবস্থানের পরও অনেক স্থানে আন্দোলনকারীরা পিছু হটছে না বরং আরো শক্তিশালী হয়ে উঠছে তারা।

 

 

এবারের আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দলমত নির্বিশেষে সকলে রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করেছে। এতে সরকারি বিভিন্ন ভবন, প্রসাশনিক ভবন, থানাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে আন্দোলনকারীরা আগুন ধরিয়েছে।

 

 

এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তাদের যুক্তিক দাবি তুলে ধরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে। পরে পুলিশ ও ছাত্রলীগ মিলে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালালে তারা ক্ষিপ্ত হয় এবং সংঘর্ষ বাধে এরপর প্রধানমন্ত্রীর ভাষ্যে বাংলাদেশ আপামোর জনতা এবং শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলে বক্তব্যে রাখলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয় এবং দেশে সহিংসতা সৃষ্টি হয়।

 

 

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার রাতে ইন্টারনেট, টেলিফোন এবং ম্যাসেজিং সার্ভিস প্রায় বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ ৷ এরপর ঢাকা থেকে প্রকাশিত সংবাদমাধ্যমগুলোর ওয়েবসাইটে আর কোনো নতুন তথ্য প্রকাশ করছে না ৷ এ নিয়ে গত চারদিনের সহিংসতায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে ঢাকা থেকে প্রকাশিত পত্রিকাগুলোর প্রিন্ট সংখ্যায় উল্লেখ করেছে। বাংলাদেশে কারফিউ জারির পর বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় সেনা সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে ৷ বাংলাদেশে কারফিউ জারির পর ঢাকার রাস্তায় সেনাসদস্যদের উপস্থিতি দেখা গেছে। এটি স্মরণকালের সবচেয়ে সহিংস আন্দোলন ৷

 

 

 

গতমাসে হাইকোর্ট এক রায়ে কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করে দিলে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা৷ ২০১৮ সালেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর কোটা বাতিল হয়েছিল৷ এবার শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সরকারের তরফ থেকে কঠোর মনোভাব দেখানো হলে আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠে এবং দ্রুতই পরিস্থিতির অবনতি ঘটে ৷ এ পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে, গুলির মুখেও আন্দোলনকারীরা পিছু হটছে না বরং সামনে বুক পেতে দিচ্ছে তবুও তারা পিছু হঠছেন না।

 

 

এদিকে সাধারণ জনগণ ছাত্রদের দাবি আদায়ে এবং তাদের যুক্তিক আন্দোলনে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছেন। আন্দোলনকারীদের হন্য কেউ পানি নিয়ে আসছেন আবার কেউ প্যাকেট করে খাবার দিচ্ছেন।

 

 

 

অভিবাবকরা বলছেন, দাবি যদি আরো আগে মেনে নেয়া হতো, তাদের সাথে কথা বলতো, তাহলে এই ধরনের সংঘাত, সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না৷ তারা মনে করছে সরকার তাদের সঙ্গে আলোচনায়, কথা বলায় যথেষ্ট দেরি করেছে ৷ বিষয়টি অনেক দূরে এগিয়ে গিয়েছে । আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুলিশ অনেক শিক্ষার্থীদের বাসায় গিয়েও ধরপাকড় করছে। পুলিশের বক্তব্য সারাদেশ থেকে এখন পর্যন্ত তিনহাজার লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৷

 

 

 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শুক্রবার রাতে দেশব্যাপী কারফিউ এবং সেনা মোতায়েন সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্পেন ও ব্রাজিল সফর বাতিল করা হয়েছে৷

 

 

 

এর আগে জনগণের উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুপ্রিম কোর্টের এ সংক্রান্ত নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান৷ তিনি সহিংসতার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে বলেও জানান৷

 

 

 

তবে এ বিষয়টা আর শুধু কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে নি। এখন নরকার পতনের আন্দোলন শুরু হয়েছে।

 

 

 

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ