মানবাধিকার লঙ্ঘনের পূর্ণাঙ্গ জবাবদিহিতা দাবি ১৩ বিশেষজ্ঞের

প্রকাশিত: ৬:২৯ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৬, ২০২৪

মানবাধিকার লঙ্ঘনের পূর্ণাঙ্গ জবাবদিহিতা দাবি ১৩ বিশেষজ্ঞের

ডায়ালসিলেট ডেস্ক :: বাংলাদেশে সহিংসতা বন্ধের এবং বিক্ষোভকারী ও রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে সহিংস দমন-পীড়ন বন্ধের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নিরপেক্ষ মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের একটি দল।

 

 

একই সঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য আহ্বানও জানিয়েছেন দলটি। দেশে ইন্টারনেট ব্যবস্থা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পুরোপুরিভাবে পুনঃস্থাপনের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

 

 

 

এদিকে সঠিক তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত করার কারণে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ হুমকি দিচ্ছেন বলে জানা যায় যা হতাশাজনক। ইউনাইটেড নেশন্স হিউম্যান রাইটস স্পেশাল প্রসিডিউরস-এর অংশ এই গ্রুপের অংশ হলো স্পেশাল র‌্যাপোর্টিউরস, ইন্ডিপেন্ডেন্ট এক্সপার্ট অ্যান্ড ওয়ার্কিং গ্রুপ। এমন কমপক্ষে ১৩ জন বিশেষজ্ঞ এই আহ্বান জানিয়েছেন।

 

 

তারা হলেন- মানবাধিকার বিষয়ে এবং ইন্টারন্যাশনাল সলিডারিটি বিষয়ক নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ সিসিলিয়া বাইলেইট,
প্রমোশন অব এ ডেমোক্রেটিক অ্যান্ড ইকুইট্যাবল ইন্টারন্যাশনাল অর্ডার বিষয়ক ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশেষজ্ঞ জর্জ কাত্রোগালোস,

 

 

বিচারবহির্ভূত, সামারি ও খেয়ালখুশিমতো হত্যাকাণ্ড বিষয়ক স্পেশাল র‌্যাপোর্টিউর মোরিস তিডবল-বিঞ্জ, জাজেস অ্যান্ড লইয়ার্স বিষয়ক নিরপেক্ষ স্পেশাল র‌্যাপোর্টিউর মারগারেট সাটের্থওয়াইত, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা উৎসাহিত ও সুরক্ষা বিষয়ক স্পেশাল র‌্যাপোর্টিউর আইরিন খান, রাইট টু ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক স্পেশাল র‌্যাপোর্টিউর সুরাইয়া দেবা, শিক্ষার অধিকার বিষয়ক স্পেশাল র‌্যাপোর্টিউর ফরিদা শাহিদ,

 

শান্তিপূর্ণ সভা ও সমাবেশের অবাধ স্বাধীনতা বিষয়ক স্পেশাল র‌্যাপোর্টিউর গিনা রোমেরো, মানবাধিকার বিষয়ক স্পেশাল র‌্যাপোর্টিউর মেরি ললোর, চেয়ার-র‌্যাপোর্টিউর আউয়া বলডি, ভাইস চেয়ার গাব্রিয়েলা সিট্রোনি, ওয়াকিং গ্রুপ অন এনফোর্ডসড অর ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিয়ারেন্সেস বিষয়ক গ্রাজিনা বারানোওয়াস্কা এবং আনা লোরেনা দেলগাডিলো পেরেজ।

 

 

২৫শে জুলাই দেয়া এক বিবৃতিতে তারা বলেন, বেআইনিভাবে বিপুলসংখ্যক হত্যাকাণ্ড, গুম, নির্যাতন এবং হাজারো মানুষকে আটকে রাখায় আমরা উদ্বিগ্ন। কর্তৃপক্ষের টার্গেটেড হামলা, হুমকি, ভীতি প্রদর্শন ও প্রতিশোধ নেয়ার হুমকিতেও আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। একই সঙ্গে সরকার সমর্থিত গ্রুপগুলো প্রতিবাদী নেতাদের, রাজনৈতিক অধিকারকর্মী এবং মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিকদেরও এভাবে টার্গেট করায় আমরা উদ্বিগ্ন।

 

 

 

আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানদণ্ড অনুযায়ী অবশ্যই অনুসরণ করে সব রকম মানবাধিকার লঙ্ঘনের দ্রুত, পূর্ণাঙ্গ, নিরপেক্ষ এবং পক্ষপাতিত্বহীন তদন্ত দাবি করেন তারা।বিশেষজ্ঞ বলেন মানবাধিকারের প্রেক্ষাপটে সরকারের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের ইতিহাস আছে। বিচার বিভাগের ওপর জনগণের আস্থায় ঘাটতি আছে। এর প্রেক্ষিতে জাতিসংঘের সমর্থন নিয়ে এবং তাদের সহায়তা নিয়ে একটি বিশ্বাসযোগ্য জবাবদিহি প্রক্রিয়া শুরু করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ।

 

 

এতে বলা হয়েছে, সব শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে আমরা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

 

 

 

বিবৃতিতে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ২০২৪ সালের ১লা জুলাই থেকে দেশজুড়ে শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু করেন। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তাদের বিরূপ বক্তব্য এবং সরকারপন্থি গ্রুপগুলো ১৫ই জুলাই হামলা চালায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর এ কারণে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ সরকার সমর্থিত গ্রুপগুলোকে সমর্থন করে বলে রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে।

 

 

এ সময় অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করা হয়েছে। সরাসরি গুলি করা হয়েছে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর। ১৮ই জুলাই সরা দেশে কারফিউ ঘোষণা করে সরকার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীকে ডাকা হয়। দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেয়া হয় তাদেরকে। একই দিনে কর্তৃপক্ষ ব্রডব্যান্ড এবং মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়। ওয়েবসাইট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং ওয়েকভিত্তিক মোবাইল ফোনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়।

 

 

এই পদক্ষেপে সংবাদ পরিবেশন ও তথ্য পাওয়ায় ধ্বংসাত্মকভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। মোবাইল ফোনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিতই আছে। ফলে দেশকে বিশ্ব থেকে কার্যত আলাদা করা হয়েছে। ২৩শে জুলাই আংশিকভাবে চালু হয়েছে ইন্টারনেট।

 

 

বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, ইন্টারনেট পুরোপুরিভাবে পুনঃস্থাপন করা উচিত। একই সঙ্গে অবিলম্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম চালু করার আহ্বান জানানো হয়েছে। হামলা, হুমকি অথবা চাপমুক্তভাবে পরিবর্তিত বিষয়ে রিপোর্ট করার জন্য পূর্ণাঙ্গ সুযোগ দিতে হবে স্থানীয় ও বিদেশি মিডিয়াকে। জনগণের তথ্য জানার অধিকারকে অবশ্যই সমুন্নত করতে হবে রাষ্ট্রকে। এসব বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এই বিশেষজ্ঞরা যোগাযোগ রাখছেন এবং দেশটির দিকে নজর রাখছেন।

 

 

 

0Shares