ডায়ালসিলেট ডেস্ক :: বৈষম্য বিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ, হামলা, ভাঙচুর, সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে ধরপাকড় শুরু করেছে। একইসাথে নতুন করে মামলাও হচ্ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঢাকাসহ ৫১টি মহানগর ও জেলায় প্রায় ৫২৫টি মামলার হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এনিয়ে গত ৯ দিনে সারা দেশে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে। শুধুমাত্র বুধবার রাত ও বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত সারা দেশে গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ১০০ জনকে। রাজধানীতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৫১ জনকে।

যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের অনেকেই বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

এদিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরীকে , বিএনপির যুববিষয়ক সহসম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সাদ মোরশেদ, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহ সভাপতি কামরুল হাসানকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় বলে বিএনপি জানিয়েছে।

এর আগে বুধবার সকালে রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

গত ১ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটাপ্রথা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা লাগাতার কর্মসূচি শুরু করেন। ১৫ জুলাই পুলিশের হামলায় আহত ও নিহত হন শিক্ষার্থী কয়েকজন। পুলিশের সঙ্গে এক হয়ে হামলা চালায় সরকারদলীয় আওয়ামীলীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের পর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে প্রায় সারাদেশ জুড়ে । পরদিন থেকে এই আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা, সংঘর্ষ, সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।

বিভিন্ন জায়গায় এসব ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় চলছে পুলিশ ও র‍্যাবের সাড়াশি অভিযান।

সাম্প্রতিক সময়ে নাশকতার অভিযোগ দেখিয়ে সারাদেশে ২২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। এর মধ্যে ঢাকায় ৫৫ ও ঢাকার বাইরে ১৭৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ১২৮টি মামলা হয়েছে। এ নিয়ে ২০১টি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২ হাজার ২০৯ জনকে। এর মধ্যে বুধবার রাত থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয় ৪৫১ জনকে।

ঢাকা মহানগরের বাইরে ঢাকা জেলায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়েছে ১৯টি। জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, মোট ১৮৫ জনকে গতকাল পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জে ১৪টি মামলায় ৩৭৪ জনকে এবং গাজীপুরে ২৮টি মামলায় ৩৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগের মহানগর ও জেলা মিলিয়ে মোট ২৮টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৭৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রাজশাহীতে ১৫টি মামলায় ২৬৯ জন, রংপুরে ১২টি মামলায় ১৪৩ জন এবং বগুড়ায় ১৪টি মামলায় ১১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সিলেট বিভাগে ১০টিমামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১২৮ জনকে। ময়মনসিংহ বিভাগে ১৫টি মামলায় ১৪৯ জনকে। বরিশাল ও খুলনা বিভাগে ৫টি মামলায় ১১০ জন। খুলনা জেলায় ৩টি মামলায় ৮৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি জেলায় থানায় মামলা করা হয়েছে।