সারাদেশে শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশ-আওয়ামীলীগের গুলি, সংঘর্ষ, নিহত ৮০

প্রকাশিত: ৮:১৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৪, ২০২৪

সারাদেশে  শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশ-আওয়ামীলীগের  গুলি, সংঘর্ষ, নিহত ৮০

ডায়ালসিলেট ডেস্ক :: সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচিতে একদফা দাবিতে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

 

 

এসময় শিক্ষার্থীদের উপর গুলি, টিয়াল শেল ছুড়ে পুলিশ। পুলিশের সাথে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা পিস্তল, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়।

 

 

রোববার সকাল থেকে শাহবাগে অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় সকালে সাড়ে ১০টার পরে আন্দোলনকারীরা পুরান ঢাকার দিক থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগে আসেন। সে সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সামনের দিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা স্লোগান দিচ্ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেন আন্দোলনকারীরা।

 

সংঘর্ষের সময় হাসপাতালের প্রাঙ্গণে রাখা গাড়িগুলো ভাঙচুর করা হয়। সে সময় হাসপাতালের ভেতরে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ইট পাটকেল ছুড়ছিলেন। আগুন দেয়া হয়েছে পরীবাগ ওভারব্রিজের নিচে।

 

 

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৮০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় ১৩ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি বিজয় বসাক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

ঢাকায় সাইন্সল্যাব এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সাইন্সল্যাবে ১ জনসহ মোট ৫ জন নিহত হয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রেসক্লাবে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছেন। তাদের স্লোগানে মুখর প্রেস ক্লাব সড়ক। বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি), গণহত্যা ও নিপীড়ন বিরোধী আইনজীবী, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যসহ বিভিন্ন ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন আন্দোলনকারীরা।

 

 

মুন্সীগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিতে ৪ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। গুলিবিদ্ধ একজন ঢাকায় আনার পথে সিরাজখানে মারা যান ।

 

 

জানা যায়, ২৫ থেকে ৩০ জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। এদের মধ্যে দুজন মৃত ছিল। তাদের বয়স ২২-২৫ বছর। আহতদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

 

মাগুরায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী নিহত হয়েছেন। তার বুকে গুলি লেগেছে। এ সময় সংঘর্ষে ৪ পুলিশ সদস্যসহ আহত হয়েছেন ১০ জন। সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ ১০ জন আহত হয়।

 

 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফরহাদ ও কলেজ শিক্ষার্থী সুমন নামের একজন ছাত্রলীগের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

 

 

রংপুরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১০ জন।

 

 

বগুড়ায় ৩ জন নিহত হয়েছেন। পাবনায় শিক্ষার্থীদের সাথে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের মিছিল থেকে গুলি চালানো হলে ৩ জন নিহত হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আওয়ামী লীগ নেতা এই গুলি চালান।

 

 

লক্ষ্মীপুরে সংঘর্ষে ৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আহত হয়েছেন ৫০ জন। সিরাজগঞ্জে ৯ জন নিহত হয়েছেন। বরিশালে নিহত হয়েছেন ২ জন। জয়পুরহাটে ১জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। কুমিল্লায় সংঘর্ষে ২ জনের মৃত্যু হয়। কিশোরগঞ্জে ৪ জন নিহত হয়েছেন। ভোলায় ৩ জন ফেনিতে ৭ জন এবং ধামরাইতে ১ জন নিহত হয়েছেন।

 

উল্লেখ্য, সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আজ রোববার থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়েছে।

 

 

তাদের ১দফা দাবি সরকারের পদত্যাগের। আজ থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।

 

 

0Shares