প্রকাশিত: ১:০৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০২৪
ডায়ালসিলেট ডেস্ক :আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে সরকার। বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের কথা জানানো হয়। ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি উঠে। ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেও এ দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি উঠে। সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বৃহস্পতিবারের মধ্যে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার আল্টিমেটাম দেয়।
এমন অবস্থায় গতকাল রাতেই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখা-২ এর জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘যেহেতু বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করিয়াই বিগত ১৫ বৎসরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানাবিধ জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল এবং এতৎসম্পর্কিত প্রামাণ্য তথ্য দেশের সকল প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হইয়াছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হইয়াছে।
যেহেতু ১৫ই জুলাই ২০২৪ তারিখ হইতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ করিয়া শত শত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিদের হত্যা করিয়াছে এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করিয়াছে।
যেহেতু সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রহিয়াছে যে, ৫ই আগস্ট ২০২৪ তারিখ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যের সহিত জড়িত রহিয়াছে। সেহেতু সরকার ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯’-এর ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করিল এবং উক্ত আইনের তফসিল-২ এ ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসাবে তালিকাভুক্ত করিলো।’ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয় অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
ওদিকে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রাতে সরকারি ঘোষণার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের অ্যাসেম্বলি হলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা হয়। প্রতিষ্ঠার সময় এর নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ। পরবর্তী সময়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এর নাম হয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। প্রতিষ্ঠার পর ভাষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধসহ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গৌরবময় ভূমিকা ছিল ছাত্রলীগের। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী নানা সময়ে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য সময়ে সময়ে সমালোচিত হয় সংগঠনটি। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের বিগত ১৫ বছরের শাসনামলে ছাত্রলীগের বেপরোয়া আচরণ ও নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আওয়ামী লীগকেও বেকায়দায় ফেলে।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech