ক্রিকেটারদের সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণে কঠোর হচ্ছে বিসিবি

প্রকাশিত: ১২:০৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৫, ২০২৪

ক্রিকেটারদের সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণে কঠোর হচ্ছে বিসিবি

স্পোর্টস ডেস্ক :জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা নানা সময়ে নিজেদের ক্ষোভ অভিমান প্রকাশ করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতো তারকা ক্রিকেটাররাও এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। আলোচনায় এসেছেন ফেসবুকে বেফাঁস মন্তব্য করে। এমনকি এই তারকা ক্রিকেটারদের অনেকের স্ত্রীও স্বামীদের পক্ষ নিয়ে  ফেসবুকে নানা রকম মন্তব্য করেছেন। এতে করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সহ দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন  হয়েছে। সেই সময় নাজমুল হাসান পাপনের ক্রিকেট বোর্ড নানা পদক্ষেপ নিলেও এমন বিষয়গুলো থামাতে পারেনি। ব্যতিক্রম হচ্ছে না নয়া সভাপতি ফারুক আহমেদের সময়ও। দু’দিন আগে জাতীয় দলের তিন ক্রিকেটার তাইজুল ইসলাম, এনামুল হক বিজয় ও শেখ মেহেদী হাসান সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কিছু ইমোজি ব্যবহার করে হতাশা, রাগ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ঘটনাটি তারা ঘটিয়েছেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে দল ঘোষণা করার পরপরই। যে কারণে ক্রিকেটপ্রেমীদের বুঝতে সমস্যা হয়নি ওয়ানডে দলে তাদের না রাখা ও নাজমুল হোসেন শান্তকে নেতৃত্বে বহাল রাখাতেই হতাশ তারা। তবে এবার পূর্বের মত হবে না বলেই বোর্ড কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিসিবির সভাপতি। দৈনিক মানবজমিনকে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা একটি পলিসি তৈরি করছি যাতে কোনো ক্রিকেটার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন কিছু পোস্ট করতে না পারে যা দেশের ক্রিকেট ও বিসিবিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।’আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে দল ঘোষণার পরপরই জাতীয় দলের তিন ক্রিকেটার নিজেদের ফেসবুক পেজে দেন রহস্যময় ‘স্ট্যাটাস’! তাইজুল, বিজয় ও মেহেদী  ফেসবুকে ইমোজির মাধ্যমে কিছু একটা প্রকাশ করতে চেয়েছেন। তা আসলে কী, কিছু লেখা না থাকায় তৈরি হয় প্রশ্নের! তাদের সেই স্ট্যাটাস নিয়ে ক্রিকেট প্রেমীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া  দেখা দেয়। কেউ কেউ তাদের পক্ষে কথা বললেও বেশির ভাগ ক্রিকেট সমর্থকই করেন নেতিবাচক সমালোচনা। জানা গেছে বিসিবি’র প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বিসিবি’র একটি সূত্রে জানা গেছে প্রধান নির্বাচক তাদের একটি বার্তাও দিয়েছেন। ক্রিকেটপ্রেমীদের বেশির ভাগই মন্তব্য করছেন দলে না রাখাতেই তাদের এমন স্ট্যাটাস। এ নিয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘ক্রিকেটাররা বিসিবি’র চুক্তিবদ্ধ।  কেউ একটি প্রতিষ্ঠানে থাকা অবস্থায় বা সুযোগ সুবিধা যখন সব পাচ্ছে সেই সময় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কিছু লিখতে বা বলতে পারে না।  যেহেতু তারা চুক্তিবদ্ধ তাই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো মন্তব্য করলে সেটি ব্যক্তিগত মতামত বলতে পারবো না। আমরা তাদের সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করবো সেটিও বলছি না। আমরা কিছু পলিসি তৈরি করবো যেন চুক্তিবদ্ধ কেউ এমন কিছু করলে সেটি নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া যায়। সত্যি বলতে এগুলোর আর সুযোগ দেয়া হবে না। এখনই শৃঙ্খলা ফেরানো জরুরী।’ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে অন্তর্কোন্দল বেশ কয়েক বছর ধরে দলটিকে কুরে কুরে খাচ্ছে। তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের ঘটনা তো সারা বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীরা জেনেছেন। নিজেদের ফেসবুকেই নয়, টিভিতে এসেও সরাসরি দু’জন দু’জনকে নিয়ে কথা বলেছেন। যার রেশ গোটা দলের ক্রিকেটারদের ওপর পড়েছে। তাদের সরাসরি প্রভাব আছে এখনো দলের জুনিয়র ক্রিকেটারদের ওপর। সিনিয়র ক্রিকেটারদের নিয়েও জুনিয়রদের মধ্যে আছে নানা বিভক্তি। আবার দলে সুযোগ না পাওয়া ক্রিকেটারদেরও আছে অভিমান। ধারণা করা হচ্ছিল শান্তর নেতৃত্বে এই বিষয়গুলো থেকে বের হয়ে আসবে দল। কিন্তু সেটি হয়নি বলেই মনে হচ্ছে, যার প্রমাণ তিন ক্রিকেটারের রহস্যময় স্ট্যাটাস। যা আবারো দলের মধ্যে অন্তর্কোন্দলেরই বার্তা দিচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবি’র এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বিষয়গুলো এখনই নজর দিতে হবে। সাকিব-তামিম ও চন্ডিকা হাথুরুসিংহের ঘটনাগুলোয় শুরু থেকে বিসিবি কঠোর হলে পরিস্থিতি এতটা খারাপ হতো না।’

0Shares