নাগরিক শক্তি’র সঙ্গে ছাত্রদের ‘জাতীয় নাগরিক কমিটির’ চিন্তা-ভাবনার সম্পর্ক নেই: ড. ইউনূস

প্রকাশিত: ৫:৩৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৪, ২০২৫

নাগরিক শক্তি’র সঙ্গে ছাত্রদের ‘জাতীয় নাগরিক কমিটির’ চিন্তা-ভাবনার সম্পর্ক নেই: ড. ইউনূস

ডায়ালসিলেট ডেস্ক :প্রশ্ন: ৮ই আগস্ট ক্ষমতা গ্রহণের পরে আপনার বিরুদ্ধে বিগত সরকারের বিরুদ্ধে যে আইনগত অভিযোগ ছিল, সেগুলো কোর্ট থেকে একের পর এক উঠে যায়। মানুষের এমন কি ভাবনার সুযোগ আছে যে, আপনার পজিশনের ভারে কিংবা প্রভাবে সেখানে এই রকম ঘটনা ঘটেছে।

ড. ইউনূস: আমি বলবো এটা সরকারে থাকি বা দেশে না থাকি, এগুলো এমনি চলে যেতো। কাজেই কোনো ভিত্তি নেই। যারা আদালতে গিয়ে আমাদের প্রতিনিধিত্ব করছে। তারাই এটা বোঝাতে পারতেন যে, এটার কোনো ভিত্তি নেই। এটার প্রশ্ন নেই, তথ্য নেই। কাজেই এটা খুবই ঠুনকো জিনিস। এটা জানা-অজানার কোনো বিষয় না। যেহেতু এটা বিচারের বিষয় বিচারেই চলে যেতো। কাজেই আমি থাকলেও যেতো, না থাকলেও যেতো। ঘটনাচক্রে আমি ছিলাম।

প্রশ্ন: বিচারব্যবস্থার ওপর তৎকালীন সরকারের যে প্রভাবের কথা মানুষ বলছিলো। বা বলাবলি আছে এখনো। আপনি কি মনে করেন ওনারা ক্ষমতায় থাকলেও কোর্ট ওভাবে ব্যবহার করতো?

ড.ইউনূস: আগে যারা ছিলো তারা তো করেনি। আর করেনি বলেই তো আদালতের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিলাম। এখন যারা এসেছে তারা বিচার চাচ্ছে, বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছে।

প্রশ্ন: তখন যেভাবে চলছিল, তাহলে তো জেলে যাওয়ার কথা ছিল

ড. ইউনূস: তখন তো জেলে যাওয়ার পথেই ছিলাম। প্রতিবারেই মনে হচ্ছে এবারই মনে হয় জেলে যেতে হবে। মাঝে মাঝে প্রস্তুতি নিয়ে গেছি এবার ফেরা নাও হতে পারে। আমার সহযোগী যারা আছেন, তারা তাদের আত্মীয়-স্বজনকে বলে গেছেন। আমি বলেছি-আমার কিছু করার নেই। যা নিয়তি আছে হবে, আমি আমার পরিবারকেও প্রস্তুত করিনি। রেখে দিলে রেখে দেবে, নিয়ে গেলে নিয়ে যাবে। আমি সহজভাবে নিচ্ছিলাম। এটা নিয়তির খেলা। সুতরাং প্রস্তুতি নিয়ে আমার কোনো কাজ নেই।

প্রশ্ন: আপনি মাত্র বললেন, এটা একটা ভিন্ন জগত। রাষ্ট্র পরিচালনায় এই রকম একটা রাজনৈতিক দায়িত্ব, যেটা আপনি চিন্তা করেননি। ২০০৭ সালে যখন আপনি একটা দল করতে গিয়েছিলেন। এটা তো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হিসেবেই চিন্তা করেছিলেন। সেটা যদি আপনি চালিয়ে যেতেন, তাহলে তো আপনাকে রাজনৈতিক দায়িত্বই পালন করতে হতো?

ড. ইউনূস: সেটার কারণ ছিল, রাজনৈতিক দলতো ছিলো না আমার। আমার বন্ধু-বান্ধব বলতো আপনি একটা দল করেন। এভাবে পেছনে লেগে রইলো। আপনি ছাড়া পারবে না কেউ। আশপাশের লোকজন যা যা বলে আরকি। ত্যক্ত-বিরক্ত হয়েই শেষে বললাম আমি করবো দল। সাংবাদিকরা ধরলো, তখন আমি বললাম হ্যাঁ আমি দল গঠন করবো। তখন বিভিন্ন জায়গায় আমি আসা-যাওয়া করছিলাম। উত্তরবঙ্গে যাচ্ছিলাম, চট্টগ্রাম যাচ্ছিলাম। প্রত্যেকবার এয়ারপোর্টেই এ কথাগুলো হচ্ছিলো। আর কোথাও না। একসময় ধরলো-তাহলে কী নাম দেবেন? আমি বললাম নাম ঠিক করিনি। করলে আপনাদের জানাবো। তখন একটা নাম দিলাম। সেটা হলো নাগরিক শক্তি। তারপর বুঝলাম বিষয়টা বেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তখন সবাইকে বললাম, মতামত নাও। কোনোভাবে এটা থেকে দূরে সরে যাওয়া যায় কিনা চেষ্টা করছিলাম। নামও হলো মতামতও হলো। তারপর দেখলাম এর মধ্যে বেশি ঢুকে যাচ্ছি। তখন আমি বললাম না আমি কোনো রাজনৈতিক দল করছি না। তখন রাজনীতির মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া এসব আমার মাথায় ছিলো না। পরিকল্পনা ছিলো না, এটা দীর্ঘমেয়াদী জিনিস।

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ