দুই তরমুজ বিক্রি হলো প্রায় ২১ লাখ টাকায়!

প্রকাশিত: ১০:৪৮ অপরাহ্ণ, মে ৩১, ২০২১

দুই তরমুজ বিক্রি হলো প্রায় ২১ লাখ টাকায়!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক::

জাপানে দুটি তরমুজ বিক্রি হয়েছে ২০ লাখ ৯৪ হাজার ৮০২ টাকায়। দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো এই খবর জানিয়েছে।

জাপানের উত্তরাঞ্চলের ইউবারি শহর উন্নতমানের তরমুজের জন্য প্রসিদ্ধ। প্রতি মৌসুমে ইউবারি তরমুজের জন্য মুখিয়ে থাকে জাপানিরা। মৌসুমের শুরুতেই তাই সাপ্পোরো পাইকারি বাজারে নিলামে বিক্রি হয় এই তরমুজ। তরমজু যত বড় ও যত গোল হয় দামও তত বেশি।

জার্মান সংবাদমাধ্যম সোমবারের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এবার একবারে গোল এক জোড়া ইউবারি তরমুজ বিক্রি হয়েছে ২৭ লাখ ইয়েন, অর্থাৎ ২৪ হাজার ৭০২ ডলার বা ২০ হাজার ২৬০ ইউরোতে। বাংলাদেশি টাকায় যার দাম ২০ লাখ ৯৪ হাজার ৮০২ টাকা!

এত দাম দিয়ে তরমুজ দুটির ক্রেতার গল্প অন্যরকম। তরমুজ দুটি কিনেছে স্থানীয় শিশু খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হোক্কাইডো প্রোডাক্টস লিমিটেড। তারা কিন্তু নিজেদের জন্য এত দাম দিয়ে এই তরমুজগুলো কেনেনি, কিনেছে ক্রেতাদের জন্যই।

হোক্কাইডো প্রোডাক্ট লিমিটেড জানে, এমন তরমুজের একটা টুকরো পেলেও ক্রেতারা নিজেকে ধন্য মনে করবেন, তরমুজ খাওয়ার খুশির অভিজ্ঞতার কথা মনে রেখে ভবিষ্যতে বারবার কিনবেন হোক্কাইডোর পণ্য।

তাই প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা দিয়েছে যে, মূল্যবান তরমুজ দুটো সমান ১০ ভাগে ভাগ করে লটারির আয়োজন করবে। যে ১০ সৌভাগ্যবান বা সৌভাগ্যবতীর নাম উঠবে লটারিতে, তারাই হবেন এক টুকরো অমৃতসম তরমুজের মালিক।

গত মৌসুমেও এরকম চড়াদামে দুটি তরমুজ কিনেছিল হোক্কাইডো প্রোডাক্ট লিমিটেড। তবে সেবার প্রতিটি তরমুজের দাম পড়েছিল ৯০০ ইউরোর মতো। কিন্তু এবার তার চেয়ে বিশ গুণের বেশি দাম দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি দুটি তরমুজ কিনেছে।

জাপানে দামি উপহার বিনিময়ের বেশ চল রয়েছে। জাপানিদের বিশ্বাস, দামি উপহার দিয়ে সম্পর্কের গভীরতা বা গুরুত্ব বেশি বোঝানো যায়। উপহার দিয়ে বিনিময়ে পাওয়ার আশাও করেন উপহারদাতা। প্রাপকও প্রতিদান দেওয়াকে অবশ্যপালনীয় কর্তব্য হিসেবে দেখেন।

টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কেভিন শর্ট জানান, জাপানিদের মধ্যে উপহার আদান-প্রদানের রীতি চলে আসছে ১৬০০ থেকে ১৮৬৮ সাল পর্যন্ত বিস্তৃত এডো আমল থেকে। ধীরে ধীরে এই রীতি সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে ওঠে। শুরুতে মৌসুমের নতুন মাছ দেয়া-নেয়ার চল ছিল।

ধীরে ধীরে উপহারসামগ্রীতে বৈচিত্র্য বাড়তে থাকে। এক সময় ফলও উঠে আসে উপহারের তালিকায়। মৌসুমী ফল বাজারে হুড়োহুড়িই লেগে যায়। তখন ‘তাইয়ো নো তামাগো’ (সূর্যের ডিম) নামের একটা আমের দাম ওঠে ৮০ ইউরো।

খুব ভালো দুটো আম একবার এক ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে ২ হাজার ৪০০ ইউরোতেও বিক্রি হয়েছিল।

জাপানের মানুষের কাছে ভালো আঙুর যত দামই হোক, ‘আঙুর ফল টক’ বলে নিজেকে প্রবোধ দিয়ে বসে থাকেন না। ২০১৬ সালে তাই ২৬টি আঙুরের এক থোকা বিক্রি হয় ৮ হাজার ইউরোতে। তাতে একটা আঙুরের দাম পড়েছিল ২৭৫ ইউরো বা ২৮ হাজার ৪৫৪ টাকা।

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ