প্রকাশিত: ১:৩৮ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০২০
চীনের উত্তরাঞ্চলে গুচ্ছাকারে আবারো নতুন বিস্তারে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।আক্রান্তে এই নতুন বিস্তারে সংক্রমিত হওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের পৃথক আচরণ লক্ষ্য করছেন চিকিৎসকেরা। এর আগে উহানে এ ভাইরাস ছড়ানোর সময় যে ধরনের উপসর্গ দেখা দিয়েছিল, জিলিন ও হ্লেংজিনের উপসর্গ এর চেয়ে আলাদা। চিকিৎসকেরা ধারণা করছেন, অজানা কোনো উপায়ে ভাইরাসটি পরিবর্তিত হচ্ছে। যা এটিকে দূর করার প্রচেষ্টা আরও জটিল করে তুলছে। সিঙ্গাপুরের দ্য বিজনেস টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে দেশটির জটিল রোগ বিশেষজ্ঞ কিআইয়ু হাইবো বলেন, চীনের উত্তরাঞ্চলে যেসব রোগী পাওয়া যাচ্ছে, তাঁদের শরীরে ভাইরাস বেশি দিন অবস্থান করছে এবং পরীক্ষায় নেগিটিভ দেখাতে সময় বেশি লাগছে। সংক্রমণের পর উহানের পরিস্থিতির চেয়ে এখানে উপসর্গ প্রকাশ পেতেও এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় বেশি লাগছে। তাই ভাইরাস ছড়ানোর আগে তা শনাক্ত করতে বেগ পেতে হচ্ছে।
কিআইয়ু হাইবো বলেন, এ ক্ষেত্রে রোগীর উপসর্গ প্রকাশ পেতে পেতে ভাইরাসটি গুচ্ছাকারে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। গত দুই সপ্তাহে তিনটি শহরজুড়ে ৪৬ জন এমন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এতে ওই অঞ্চলে ১০ কোটি মানুষকে আবার লকডাউনের আওতায় আনতে হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা এখনো ভাইরাসটি উল্লেখযোগ্য উপায়ে পরিবর্তিত হচ্ছে কি না, তা পুরোপুরি বুঝতে পারছেন না। চীনা চিকিৎসকেরা পার্থক্যগুলো দেখছেন। এর কারণ উহানের চেয়ে রোগীদের আরও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন তাঁরা। তবু এ ধরনের অনুসন্ধান প্রমাণ করে যে, ভাইরাসটি কীভাবে উদ্ভূত হয়, সে সম্পর্কে অনিশ্চয়তা রয়েছে।এতে এর বিস্তার রোধে সরকারের চেষ্টা এবং অর্থনীতি পুনরায় উন্মুক্ত করার প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত করবে।
ফক্সনিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মাসে চীনের হাংঝোতে ঝেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ভাইরাসটি কমপক্ষে ৩০ টি ভিন্ন ভিন্ন জিনগত সংস্করণে রূপান্তরিত হয়েছে। ওষুধ ও ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে এসব রূপান্তরের বিষয় মাথায় রাখতে হবে। সম্ভাব্য সমস্যাগুলো এড়াতে এসব বিবেচনা করা প্রয়োজন।
বিশ্বব্যাপী গবেষকরা ভাইরাসটি রূপান্তরের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সংক্রামক হয়ে ওঠার জন্য উল্লেখযোগ্য উপায়ে পরিবর্তিত হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে প্রাথমিকভাবে গবেষণার এই সম্ভাবনাটিকে উড়িয়ে দেওয়া হয়।
হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ স্কুলের পরিচালক ও ক্লিনিকাল অধ্যাপক কেইজি ফুকুদা বলেন, ‘তত্ত্ব অনুসারে, জিনগত কাঠামোর কিছু পরিবর্তন ভাইরাসের কাঠামোতে বা ভাইরাসের আচরণের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে পারে। তবে অনেক মিউটেশন কোনো বিবেচনামূলক পরিবর্তন আনেনা। চীনা মি্উটেশনের ক্ষেত্রে পরিষ্কার প্রমাণ নেই।’
কিআইয়ু হাইবো বলেন, চিকিৎসকেরা রা লক্ষ্য করেছেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে গুচ্ছাকারে সংক্রমিত রোগীদের বেশির ভাগ ফুসফুসই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে উহানের রোগীদের হৃৎপিণ্ড, কিডনি ও অন্ত্রসহ একাধিক অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। রাশিয়া থেকে সংক্রমিত হয়ে আসা রোগীদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের সংক্রমণের ক্ষেত্রে এটা দেখা গেছে। জিনেটিক সিকোয়েন্সিংয়ে উত্তর-পূর্বের রোগীদের সংক্রমণ এবং রাশিয়া ফেরত রোগীদের সংক্রমণে মিল পাওয়া গেছে।
ডেইলি মেইল জানিয়েছে, মার্কিন গবেষকেরা করোনাভাইরাসের ১৪ ধরনের রূপান্তর খুঁজে পেয়েছেন। লস আলামোস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এসব রূপান্তরের মধ্যে একটি ভাইরাসটিকে আরও সংক্রামক করে তুলতে পারে।
সূত্র : প্রথম আলো
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech