ফিলিস্তিনি তরুণ হত্যা নিয়ে ব্যতিক্রমী আচরণ ইসরায়েলের

প্রকাশিত: ৭:০১ অপরাহ্ণ, জুন ৪, ২০২০

ফিলিস্তিনি তরুণ হত্যা নিয়ে ব্যতিক্রমী আচরণ ইসরায়েলের

ইসরায়েলি পুলিশের গুলিতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ফিলিস্তিনি তরুণের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন ইসরায়েল ও আন্তর্জাতিক কর্মকর্তারা। এর আগে এমন বিবৃতি দিতে খুব কমই দেখা গেছে। তবে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের বিষয়ে আশাবাদী নন ফিলিস্তিনিরা।

গত (রোববার) ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ এই মৃত্যুতে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এ ঘটনার জন্য খুব দুঃখিত। আমি নিশ্চিত, দ্রুত এর তদন্ত হবে এবং একটি সিদ্ধান্ত আসবে।’

একই দিন মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য জাতিসংঘের বিশেষ সমন্বয়কারী নিকোলে ম্লাদেনভও এই হত্যার নিন্দা জানিয়ে এটিকে একটি ‘ট্র্যাজেডি’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘যা উচিত হয়নি এবং এড়ানো উচিত ছিল।’ এক টুইট বার্তায় ম্লাদেনভ বলেন, ‘কর্তৃপক্ষকে দ্রুত তদন্ত করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে, এই জাতীয় ঘটনা যাতে না ঘটে।’

৩০ মে আইয়াদ হালাক নামের ৩২ বছরের ওই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তরুণ পুরোনো জেরুজালেমে একটি স্কুল থেকে বের হয়ে হাঁটছিলেন। এ সময় ইসারায়েলি পুলিশ তাঁকে থামতে বলে। ইসরায়েলি পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানায়, পুলিশের টহল ইউনিট ওই ব্যক্তির হাতে পিস্তলসদৃশ বস্তু দেখে তাঁকে সন্দেহ করে। তারা হামলার আশঙ্কা করে তাঁকে থামতে বলে এবং ধাওয়া করে। তবে আইয়াদ আতঙ্কিত হয়ে দৌঁড়াতে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁকে গুলি করেন।

নিহত ওই তরুণের পরিবারের সদস্যেরা এ ঘটনায় ইসরায়েলি পুলিশের তদন্ত নিয়ে আশাবাদী নন। নিহত তরুণের এক ভাই আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আইয়াদ হত্যার তদন্তের আদেশ দিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ—এমন সংবাদের কোনো মানে নেই আমাদের কাছে। আমরা জানি যে তারা সত্য উল্টে দেবে। তারা যদি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছে যে কর্মকর্তারা তাঁকে আত্মরক্ষার জন্য মেরেছিলেন, আমরা অবাক হব না।’

ইসরায়েলি পুলিশের অভ্যন্তরীণ তদন্ত বিভাগ ঘটনার তদন্ত করছে। ঘটনাস্থলে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্য তুলে ধরে জানা যায়, এম ১৬ অ্যাসল্ট রাইফেলে সজ্জিত নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা আইয়াদকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। যদিও ওই পুলিশ তাঁকে থামার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, তিনি নিজেও আইয়াদের হাতে গ্লাভস দেখে তাঁকে জঙ্গি বলে সন্দেহ করেন।

আইয়াদের পরিবারের সদস্যরা জানান, ছোটবেলায় অটিজম ধরা পড়ে তাঁর। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে সমস্যা হতো। মিশতে পারতেন না।

তাঁর বাবা খায়েরি হালাক জানান, তাঁর ছেলের মানসিক বিকাশ ৮ বছরের শিশুর মতো ছিল। আশেপাশের জীবনের বিপজ্জনক বাস্তবতার বিষয়ে কোনো ধারণা ছিল না তাঁর।

হালাকের পরিবারের সদস্যেরা ইসরায়েলি মিডিয়ায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘কাউকে আঘাত করার কোনো ক্ষমতা ছিল না আইয়াদের।

0Shares