প্রকাশিত: ৬:২৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ২০, ২০২৩
ডায়াল সিলেট ডেস্ক: বার বার মৌলভীবাজারে আটক হচ্ছে রোহিঙ্গা। বাংলাদেশ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে যাওয়ার জন্য নিরাপদ রোড হিসেবে মৌলভীবাজারের সীমান্ত এলাকা ব্যবহার করছে মানবপাচারকারীরা। সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের আনাগুনা বেড়ে যাওয়ায় সীমান্ত ঘেষা উপজেলা গুলোতে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা পাচারে গড়ে উঠেছে আন্ত:জেলা মানবপাচার চক্র। এই চক্রে রয়েছে রোহিঙ্গা ও বাঙ্গালী। তাদের যোগাযোগ রয়েছে ভারতের দালালদের সঙ্গেও। গত দুই বছরে এ জেলার ১০১ রোহিঙ্গা আইনশৃঙ্গলা বাহীনির হাতে আটক হয়েছে। তবে মানবপাচারকারী চক্রের কেউ ধরা পরেনি।
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য ঘেষা মৌলভীবাজার জেলা। এ জেলার শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, বড়লেখা ও জুড়ি উপজেলায় রয়েছে ভারতীয় সীমান্ত। এসব সীমান্তে রয়েছে চা বাগান ও বনাঞ্চল। তাই রোহিঙ্গা পাচারে নিরাপদ রোড হিসেবে এই সীমান্ত এলাকা ব্যবহার করছে মানবপাচারকারীরা। এদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বার বার বাহিরে বেড় হয়ে আসা ও মৌলভীবাজার সীমান্ত ব্যবহার করা নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলাবাসী।
রোহিঙ্গরা এভাবে মৌলভীবাজার সীমান্ত এলাকা যাতে ব্যবহার না করতে পারে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের আরো সজাগ থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এ এস এম আজাদুর রহমান।
জানা যায়, তাঁরকাটার বেড়া কেটে রাতের আধাঁরে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গারা বের হয়ে আসে। উখিয়া ক্যাম্পের এক রোহিঙ্গা ব্যক্তি তাদের পালিয়ে আসতে সাহায্য করে। সেখান থেকে তারা চলে আসেন মৌলভীবাজার। ভারতে রোহিঙ্গা পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে মৌলভীবাজার সীমান্তকে বেছে নিয়েছে মানবপাচারকারীরা। এখানকার দালালরা তাদের সীমান্তে নিয়ে যায়। সীমান্তে নিয়ে সীমান্তবর্তী কোন বাড়ীতে লুকিয়ে রাখা হয় তাদের। রাতে সীমান্ত পার করে দেয়। এপারের দালালরা রোহিঙ্গাদের সীমান্ত পার করে দিলে ওপারের দালালরা তাদেরকে গন্তব্যে নিয়ে যায়। অনেক সময় ভারত সীমান্তে গিয়ে ধরা পরা রোহিঙ্গাদের আবার বাংলাদেশ পুশব্যাক করে দেয় বিএসএফ। একজন রোহিঙ্গাকে সীমান্ত পার করে দিতে দালালরা নিচ্ছে ২০ হাজার টাকা। বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ভারতে পাচার করা হচ্ছে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাফিউল ইসলাম পাটোয়ারী জানান, সর্বশেষ গত ৩ জুলাই মোঃ রুবেল মিয়া কক্সবাজারের কুতুব পালন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে ভারতে যাবার উদ্দেশ্য শ্রীমঙ্গলের দিকে চলে আসে। কিন্ত সাতগাঁও রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় আসার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। পরবর্তীতে তাকে যথাযথ আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে কক্সবাজার প্রেরণ করেছি।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, গত মাসের ৯ জুন জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই সীমান্ত থেকে তিন রোহিঙ্গা তরুণি ও রাতে ভারত থেকে পুশব্যাক করা এক রোহিঙ্গা যুবককে আটক করে বিজিবি। এরা কোন এক দালাল চক্রকে ধরে ভারতে প্রবেশ করে।
এর আগে গত ৬ জুন একই উপজেলার সীমান্তবর্তী চা
ম্পারাই চা বাগান থেকে দুই রোহিঙ্গাকে আটক করে বিজিবি। এছাড়া ১৩ মে মৌলভীবাজারের শ্যামেরকোনা বাজারে ৩ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর শ্রীমঙ্গল থেকে ১৬ জন ও একই দিন জুড়ী উপজেলার নালাগুঞ্জি থেকে ১ রোহিঙ্গাকে আটক করে পুলিশ।
১৪ ডিসেম্বর জুড়ী উপজেলার কচুরগুল নালাজি সীমান্ত থেকে ৯ রোহিঙ্গকে আটক করে পুলিশে দেয় স্থানীয়রা। আটক রোহিঙ্গারা পুলিশকে জানায়, তাদের সঙ্গে একজন বাংলাদেশি নাগরিক ছিল। তারা মৌলভীবাজারে এসে দালালের পাঠানো সিএনজি চালিত আটোরিক্সা করে জুড়ীর সীমান্তে যায়। সেখানে সুমন নামে এক দালালের বাড়িতে অবস্থান নেয়। রাতে তারা সীমান্ত পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করে। সেখানে দুই দালাল তাদের দিল্লি পাঠানোর জন্য বাসে তুলে। তবে বাসে ওঠার পরপরই ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী তাদের আটক করে নালাগুঞ্জি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশব্যাক করে দেয়।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, রোহিঙ্গারা মৌলভীবাজারে আসার পেছনে একটি চক্র জড়িত রয়েছে। এই চক্রকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ কাজ করছে। গত বছর দুইজন বাঙ্গালীর নাম পুলিশ পেয়েছিল। তবে এখন তারা নিরুদ্দেশ।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech