শ্রীলংকা-আফগানিস্তান উভয়েরই লক্ষ্য সেমির দৌঁড়ে এগিয়ে যাওয়া

প্রকাশিত: ৪:০৯ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৩০, ২০২৩

শ্রীলংকা-আফগানিস্তান উভয়েরই লক্ষ্য সেমির দৌঁড়ে এগিয়ে যাওয়া

স্পোর্টস ডেস্ক :: সেমিফাইনালের দৌঁড়ে এগিয়ে যাবার লক্ষ্য নিয়ে বিশ্বকাপে আজ সোমবার লিগ পর্বে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে মুখোমুখি হবে শ্রীলংকা-আফগানিস্তান। এ ম্যাচের বিজয়ী দল সেমির পথে এক ধাপ এগিয়ে যাবে। অবশ্য হেরে যাওয়া দলেও সেমিতে খেলার সুযোগ থাকবে। তবে সেটা অনেক হিসেবে নিকেশের পর। পুনেতে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে শ্রীলংকা-আফগানিস্তান লড়াই।

 

৫ খেলা শেষে ২ জয় ও ৩ হারে সমান ৪ করে পয়েন্ট আছে শ্রীলংকা-আফগানিস্তানের। রান রেটে আফগানদের চেয়ে এগিয়ে টেবিলের পঞ্চমস্থানে আছে শ্রীলংকা। সপ্তম স্থানে আছে আফগানরা।

 

পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ চারে থাকা চার দলের পয়েন্ট ১০ ও ৮ করে। শ্রীলংকা-আফগানিস্তান ম্যাচের বিজয়ী দলে পয়েন্ট হবে ৬। বিজয়ী দল নিজেদের শেষ তিন ম্যাচ জিতলে ১২ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালে জন্য লড়াই করবে। হেরে যাওয়া দল ৪ নিয়ে শেষ তিন ম্যাচ জিতলে ১০ পয়েন্ট সংগ্রহে জমা করবে। তখন অন্যান্য দলের সাথে সেমিতে খেলার সুযোগ থাকবে তাদেরও।

 

নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা-পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের লজ্জা পায় শ্রীলংকা। হ্যাট্টিক হারের পরও হাল ছাড়েনি লংকানরা। নেদারল্যান্ডসের পর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে লড়াইয়ে ফিরে শ্রীলংকা।

 

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ জয়ে বোলাররা লংকান দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখেছেন। তিন পেসার লাহিরু কুমারা ৩টি, সাড়ে তিন বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বল করে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ এবং কাসুন রাজিথা সমান ২টি করে উইকেট নেন। এতে ১৫৬ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড।

 

জবাবে পাথুম নিশাঙ্কার ৭৭ ও সাদিরা সামারাবিক্রমার ৬৫ রানে ১৪৬ বল হাতে রেখেই ম্যাচ জিতে নেয় শ্রীলংকা। টানা দুই জয়ের ধারাটা অব্যাহত রাখতে মরিয়া শ্রীলংকা। ওপেনার নিশাঙ্কা বলেন, ‘টানা দুই জয়ে সেমিফাইনালে খেলার লড়াইয়ে ফিরেছি আমরা। কিন্তু সেমিতে খেলতে হলে, জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোতে চাই। এখন আমাদের লক্ষ্য আফগানিস্তানের বিপক্ষে পূর্ণ ২ পয়েন্ট সংগ্রহ করা। হ্যাট্টিক জয়ে চোখ রেখেই আফগানদের বিপক্ষে খেলতে নামবো আমরা।’

 

তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে ইনজুরির কারণে পেসার কুমারার ছিটকে যাওয়া লংকান দলের জন্য বড় ধাক্কা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে অনুশীলনে ঊরুর ইনজুরিতে বিশ^কাপ শেষ কুমারার। তার পরিবর্তে শ্রীলংকার বিশ^কাপ দলে ডাক পেয়েছেন ৪৪ ওয়ানডেতে ৫০ উইকেট নেয়া আরেক পেসার দুসমন্থ চামিরা।

 

শ্রীলংকার মত বিশ^কাপে শুরুটা বাজে ছিল আফগানিস্তানেরও। কিন্তু লংকানদের মত হ্যাট্টিক হার নয়, প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশের পর ভারতের কাছে হারতে হয় আফগানদের। হ্যাট্টিক হার এড়িয়ে তৃতীয় ম্যাচেই জয় তুলে নেয় আফগানিস্তান। ইংল্যান্ডকে ৬৯ রানে হারিয়ে অঘটনের জন্ম দেয় তারা। এরপর নিউজিল্যান্ডের কাছে হারলেও, সর্বশেষ ম্যাচে আবারও চমক দেখায় আফগানিস্তান। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮ উইকেটের বড় জয় তুলে নেয় আফগানরা।

 

আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২৮২ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। ২৮৩ রানের টার্গেট স্পর্শ করতে বেগ পেতে হয়নি আফগানদের। তিন হাফ-সেঞ্চুরিতে ১ ওভার বাকী থাকতেই জয় তুলে নেয় আফগানিস্তান।

 

পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়, বাড়তি অনুপ্রেরণা দিচ্ছে আফগানিস্তানকে। শ্রীলংকাকে হারানোর ব্যাপারে আশাবাদি তারা। পাকিস্তানের বিপক্ষে বল হাতে ৩ উইকেট নেয়া তরুণ স্পিনার নূর আহমেদ বলেন, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়টি আমাদের জন্য স্পেশাল। প্রথমবারের মত পাকিস্তানকে ওয়ানডেতে হারিয়েছি আমরা। এই জয় আমাদের আত্মবিশ^াস অনেকখানি বাড়িয়ে দিয়েছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় শ্রীলংকা ম্যাচে সহায়ক হবে।’

 

এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে ১১বার মুখোমুখি হয়েছে শ্রীলংকা-আফগানিস্তান। এরমধ্যে শ্রীলংকার জয় ৭টিতে, আফগানিস্তানের জয় ৩টি এবং ১টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। বিশ^কাপে আফগানদের বিপক্ষে দু’বারের দেখাতেই জয় পেয়েছে লংকানরা।

 

গত সেপ্টেম্বর সর্বশেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছিলো শ্রীলংকা-আফগানিস্তান। এশিয়া কাপের ঐ ম্যাচে ২ রানে জিতেছিলো লংকানরা।

 

শ্রীলংকা দল : কুশল মেন্ডিস (অধিনায়ক), কুশল পেরেরা, পাথুম নিশাঙ্কা, সাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিথ আসালাঙ্কা, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, মহেশ থিকশানা, দুনিথ ওয়েলালাগে, দুশান হেমন্ত, চামিকা করুনারতেœ, দুসমন্থ চামিরা, দিলশান মাদুশঙ্কা, কাসুন রাজিথা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ।

 

আফগানিস্তান দল : হাশমতউল্লাহ শাহিদি (অধিনায়ক), রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, রিয়াজ হাসান, রহমত শাহ, নজিবুল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ নবি, ইকরাম আলিখিল, আজমতউল্লাহ ওমরজাই, রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, নুর আহমেদ, ফজলহক ফারুকি, আবদুল রেহমান ও নাভিন উল হক।

 

0Shares