অহেতুক ড. ইউনূসকে গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা নেই: আইনমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৩:৪০ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৪

অহেতুক ড. ইউনূসকে গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা নেই: আইনমন্ত্রী

ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: শ্রম আদালতে সাজা পাওয়া গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা চলমান থাকায় এখনই অহেতুক তাঁকে গ্রেপ্তারের ইচ্ছা সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বিচারকদের (সহকারী জজ) প্রশিক্ষণ কোর্স উদ্বোধনের পর এ কথা বলেন তিনি।

 

ইউনূসকে গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা সরকারের আছে কি না জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, ‘আমি আবারও বলছি, সরকারের গ্রেপ্তারের কোনো পরিকল্পনা নেই।’

 

রবিবার রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজ ও সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের ৪৯ তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের আইনমন্ত্রী বলেন, ‘যে মামলাগুলো চলছে, এনবিআরের মামলা আছে কিছু, শ্রম আদালতে মামলা আছে, সেগুলোর বিচার হবে। বিচারকগণ রায় দেবেন। সে রায় কার্যকর করা অবশ্যই সরকারের দায়িত্ব, সরকার সেটা করবে। কিন্তু অহেতুক ড. ইউনূসকে গ্রেপ্তার করা বা জেলে নেওয়ার কোনো ইচ্ছা সরকারের নেই।’

 

শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় তিন বছর আগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের এক মামলায় গত ১ জানুয়ারি ইউনূসসহ চারজনকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা। সাজাপ্রাপ্ত অন্য তিনজন হলেন— গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।

 

এরপর আপিলের শর্তে তাৎক্ষণিক তাঁদের এক মাসের জামিনও দেন আদালত। সে অনুযায়ী আপিল করলে ২৮ জানুয়ারি শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল ইউনূসসহ চারজনকে ৩ মার্চ পর্যন্ত জামিন দেন। এ ছাড়া ৩ মার্চ পর্যন্ত রায়ের কার্যক্রম স্থগিত করেন।

 

পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে এর বিরুদ্ধে আপিল করেন ইউনূস। এরপর ২৮ জানুয়ারি আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে তাঁদের জামিন বহাল রাখে শ্রম আপিল ট্রাইবুনাল। সেই সঙ্গে সাজা স্থগিত করে মামলার রায়সহ নথি আগামী ৩ মার্চ আদালতে উপস্থাপনের তারিখ রাখেন বিচারক এম এ আউয়াল।

 

এদিকে রবিবার সাজার রায় স্থগিতের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আবেদন করে কল কারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর। একইসঙ্গে আদালতের অনুমতি ছাড়া ইউনূস যেন বিদেশ যেতে না পারেন সে আবেদনও করা হয়।

 

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘সাজা স্থগিতের বিধান নেই। সে জন্য এই আবেদন করা হয়েছে। ড. ইউনূস সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তাই তাঁর চলাফেরা আদালতের সন্তুষ্টি সাপেক্ষে হওয়া উচিত। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।’

 

এ সময় সাগর-রুনির বিচার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই যে, এই হত্যাকাণ্ডের আসল অপরাধীদের ধরে তাঁদের অবশ্যই বিচার করা হবে। এই হত্যার বিচারটা হারিয়ে যাবে না, এটাও আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই।’

মন্ত্রী বলেন, ‘কোনো হত্যাকাণ্ড বিচার ছাড়া আমাদের মন থেকে হারিয়ে যাবে না। যারা হতাশ হয়েছেন, তাঁদের আশ্বস্ত করতে চাই, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হবেই। আর এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করার জন্য যে যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সরকার নিশ্চয় নিবে। সেটা যদি র‍্যাবের কাছ থেকে তদন্তের জায়গা পরিবর্তন করা দরকার সেটা আমরা করব। তবে একটু অপেক্ষা করা প্রয়োজন।’

 

0Shares