এক ভোটে’ প্রেসিডেন্ট, হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস

প্রকাশিত: ১২:১৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২, ২০২৪

এক ভোটে’ প্রেসিডেন্ট, হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস

আন্তজার্তিক ডেস্ক :মনে হচ্ছিল এটি যেন এক শবযাত্রা। সবাই যেন পাথর হয়ে গেছে। আড়াইটার সময় আল গোর একা তার স্যুইটের বেডরুমে গিয়ে বুশকে ফোন করলেন এবং পরাজয় স্বীকার করলেন। বুশকে অভিনন্দন জানালেন।’’ আল গোর যখন হার স্বীকার করে বক্তৃতা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তখন তার টিমের কাছে একটি বার্তা আসলো। “তার দলের একজন কর্মীর কাছে একটা  টেক্সট  মেসেজ আসলো ক্যাম্পেইন ম্যানেজারের কাছ থেকে। বলা হলো, আল গোরকে যেন অনুষ্ঠান মঞ্চে যেতে দেয়া না হয়। কারণ ভোটের লড়াই এখনো শেষ হয়নি।” কিন্তু আল গোর চাচ্ছিলেন, তিনি মঞ্চে গিয়ে বক্তৃতা দেবেন। তার কথা ছিল, “লোকজন বহু ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছে। আমি সবাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’’ তখন একটা লোক সবার সামনে গিয়ে বললো, মাইক রেডি নয়। কাজেই সবাই আবার বাইরের রুমে গিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো। এরপর লোকটা আল গোরকে গিয়ে বললো, “ফ্লোরিডার ব্যাপারটা এখনো শেষ হয়ে যায়নি।’’

এ বয়ান ক্যালি শেলের। যিনি ২০০০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থী আল গোরের অফিসিয়াল ফটোগ্রাফার ছিলেন। পরে কাজ করেছেন বারাক ওবামার সঙ্গেও। কীভাবে মাত্র একটি ইলেক্টোরাল ভোটের ব্যবধানে জর্জ ডাব্লিউ বুশ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন তার রোমাঞ্চকর, উত্তেজনাপূর্ণ বর্ণনা দেন ক্যালি শেল, বিবিসিতে যা তুলে এনেছিলেন রেবেকা কেসবি। শুধু যুক্তরাষ্ট্র কেন, পৃথিবীতেই সম্ভবত এমন নির্বাচন আর হয়নি। একবার বলা হচ্ছিল আল গোর জিতেছেন। পরে খবর পাওয়া যায় বুশ জিতেছেন। ব্যালট গণনা নিয়ে লড়াই গড়ায় আদালতে। ফ্লোরিডার আদালতের রায় পাল্টে যায় মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে। তাও সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে। এক মাসের আইনি লড়াই শেষে মাত্র একটি ইলেক্টোরাল ভোট প্রেসিডেন্টের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়।আরেকটি মার্কিন নির্বাচন একেবারেই দোরগোড়ায়। দুইদিন বাদেই ভোট। ২০০০ সনের জনমত জরিপ যেমন লড়াইয়ের আভাস দিয়েছিল এবারো একই রকম খবর পাওয়া যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে ডনাল্ড ট্রাম্প এবং কমালা হ্যারিসের মধ্যে। প্রায় সব জরিপই বলছে তাদের ভোটের ব্যবধান হবে একেবারে সামান্য। কোথাও ট্রাম্প এগিয়ে, কোথাও কমালা। ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান শিবিরের ঘুম হারাম। যদিও ভোটের আগেই উত্তেজনা তৈরি করেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। সিএনএনে একজন ভাষ্যকার বলছিলেন, ট্রাম্প এমন একটি আবহ তৈরি করতে চাচ্ছেন যেন তার জয়ই সত্য, আর সব মিথ্যা। ট্রাম্প এরইমধ্যে দাবি করেছেন, ‘গড যদি ভোট গনণাকারী হন তবে তিনি ভূমিধস জয় পাবেন।’ পুরো দুনিয়ার চোখ এখন মার্কিন মুল্লুকে। পরিবর্তিত পৃথিবীতেও আমেরিকা বিশ্ব নেতা। সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন ইউরোপ এবং ইউক্রেন। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে ইউক্রেনের পাশে আছে যুক্তরাষ্ট্র। ডনাল্ড ট্রাম্প যদি ক্ষমতায় আসেন তাতে পরিবর্তন আসবে এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ চলছে। মার্কিন নির্বাচনের পর সে অঞ্চলে কী হবে? যুদ্ধ বিস্তৃত হবে? শান্তি ফিরবে? বিশ্ব ব্যবস্থায় কি কোনো পরিবর্তন আসবে? পুতিন যে ট্রাম্পের জয় চাইছেন তা কারও অজানা নয়। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট যেই হোন চীনের সঙ্গে সম্পর্কের বড় কোনো হেরফের হবে না।

0Shares