আবারও ধরা খেলেন দুস্কৃতিকারী কবির আহমদ ও তাজ উদ্দিন চক্র

প্রকাশিত: ২:২৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫

আবারও ধরা খেলেন দুস্কৃতিকারী কবির আহমদ ও তাজ উদ্দিন চক্র

ডায়ালসিলেট ডেস্ক :সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার জাউয়াবাজার এলাকার চিহ্নিত দুস্কৃতিকারী যুক্তরাজ্য প্রবাসী কবির আহমদ এবং তার অন্যতম সহযোগী একই এলাকার তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমেদ আবারও ধরা খেয়েছেন। যুক্তরাজ্যের একটি আদালত কবির আহমদের অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ মুদ্রায় প্রায় ৬ হাজার পাউন্ড জরিমানা করেছেন। বিজ্ঞ আদালত তার অন্যতম সহযোগী তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমদকে করেছেন সতর্ক ও তিরস্কার। ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাজ্যের সেন্ট্রাল লন্ডন কাউন্টি কোর্টের বিজ্ঞ ডেপুটি ডিস্ট্রিক্ট জজ মিসেস লি-এর আদালতে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার।

উল্লেখ্য, বিবাদী কবির আহমদ (৫৪) ছাতক উপজেলার জাউয়াবাজার ইউনিয়নের পাইগাঁও নিবাসী মৃত হাজী জাফর আলী ওরফে ঠাকুর মিয়ার ছেলে এবং তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমদ (৫১) একই উপজেলার সিংচাপইড় ইউনিয়নের গহরপুর গ্রামের মৃত্যুর রইছ আলীর ছেলে।
মামলাসুত্রে ঘটনাক্রমে জানা গেছে, যুক্তরাজ্যের লন্ডন সিটিতে কবির আহমদ এবং শহীদুজ্জামান সুজনের নামে যৌথ একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। ২০১২ সালের আগস্ট মাসে প্রয়োজনীয় দলিলাদিতে স্বাক্ষরের মাধ্যমে এবং ২ জন স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে কবির আহমদ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিজের মালিকানার অংশ অপর অংশীদার শহীদুজ্জামান সুজনের নামে বিক্রি ও হস্তান্তর করেন। কিন্তু প্রায় ১০ বছর অতিবাহিত হলেও কবির আহমদ স্বাক্ষরিত মালিকানা দলিল শহীদুজ্জামান সুজনের নামে রেজিস্টারি করে দেন নাই। এ ব্যাপারে শহীদুজ্জামান সুজন বার বার তাগদা দিলেও কবির আহমদ দিমু-দিচ্ছি করে অন্যায়ভাবে কালক্ষেপন করতে থাকেন। শেষ পর্ন্ত শহীদুজ্জামান সুজন ২০২২ সালে স্থানীয় আদালতে আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হন (মামলা নাম্বার- K00CL906)। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত বিবাদী কবির আহমদকে শোকজ নোটিশ পাঠান।
কিন্তু এরপরও বিবাদী কবির আহমদ বিজ্ঞ আদালতের পাঠানো শোকজ নোটিশের জবাব দেননি বা আদালতে উপস্থিত হতে কোন আইনী প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা করেননি। ফলে আদালত অবমাননার অভিযোগে বিজ্ঞ আদালত ২০২৪ সালের ১৫ মে বিবাদী কবির আহমদকে বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ২ লাখ টাকা জরিমানা করেন এবং একই সাথে আদালত চূড়ান্ত শুনানীর জন্য ২০২৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেন। একই আদেশে বিজ্ঞ আদালত বিবাদী কবির আহমদকে তার বক্তব্য ইংরেজিতে উপস্থাপনের জন্য অভিজ্ঞ একজন অনুবাদক (ইন্টারফ্রেটার) নিয়ে যাওয়ারও নির্দেশ দেন।
নির্দিষ্ট তারিখে বিবাদী কবির আহমদ বিজ্ঞ আদালতে তার বক্তব্য ইংরেজিতে উপস্থাপনের জন্য অনুবাদক (ইন্টারফ্রেটার) হিসেবে তৃতীয় শ্রেণী পড়ুয়া তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমদকে নিয়ে যান। কিন্তু অনুবাদক তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমদ বিজ্ঞ আদালতে বিবাদী কবির আহমদের বক্তব্য ইংরেজিতে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত ইন্টারফ্রেটার তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমদকে ভর্ৎসনা করেন এবং বলেন, ‘তোমার চেয়ে বিবাদী কবির আহমদের ইংরেজি অনেকটা ভালো।’
খামখেয়ালী করে আদালতের মূল্যবান সময় নষ্ট করার অভিযোগে বিবাদী কবির আহমদকে বিজ্ঞ আদালত প্রায় ৬ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড জরিমানা করেন। জরিমানার অর্থ আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শহীদুজ্জামান সুজন বরাবরে পরিশোধের জন্য কবির আহমদকে কড়া নির্দেশ দেন এবং আগামী মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে মামলার চূড়ান্ত শুনানীর নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন।

0Shares