৭ দিনের মধ্যে ধর্ষণ মামলার ট্রায়াল সম্ভব

প্রকাশিত: ৫:২০ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৫, ২০২৫

ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: নারী ও শিশু নির্যাতন আইন অনুযায়ী ধর্ষক যদি গ্রেফতার হয় কিংবা কোনোভাবে যদি সে আটক হয় এ ক্ষেত্রে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার বিধান আগে থেকেই আছে। যদি আসামি ধরা না পড়ে সে ক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্ত শেষে ৬০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেবে। এ ক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তা ব্যর্থ হলে আদালতের অনুমতিসাপেক্ষ আরও ৩০ দিন সময় নিতে পারবেন।

 

এবার আসি মাগুরায় শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার বিষয়ে। হাইকোর্ট ৯ মার্চ সময় বেঁধে দিয়েছেন ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার করতে এবং ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত করতে। পাশাপাশি আইন উপদেষ্টা এই ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত ও ৯০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার কথা বলেন। আন্দোলনের মুখে বৃহস্পতিবার আইন উপদেষ্টা ধর্ষকদের বিচারের বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট যদি হয়ে যায় তাহলে ৭ দিনের মধ্যে বিচার করার কথা বলেছেন। এর জন্য বিশেষ অধ্যাদেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

 

শিশু ধর্ষণের বিচার বা এ জাতীয় স্পর্শকাতর নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের তদন্ত ও বিচারের বিষয়ে বিদ্যমান আইনে কী আছে সেদিকে নজর দেওয়া যাক।

 

নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে বলা আছে সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে। পুরোনো আইনটাই যদি ধরি, কিংবা হাইকোর্ট নির্দেশ দিলেন ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিতে; এরপর?ও কী দ্রুত তদন্ত শেষ করতে অধ্যাদেশ দরকার?

 

হাইকোর্ট নির্দেশ দিলে কোনো আইন লাগে না। হাইকোর্টের নির্দেশ ভিন্ন এখন ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার মানে এই নয় যে, একেবারে ৩০ দিনের মধ্যেই দিতে হবে। আমরা যদি ৭ দিনেও তদন্ত করতে পারি তাহলে সমস্যাটা কোথায়? এখন নতুন আইন বা অধ্যাদেশ লাগবে কেন?

 

আইন অনুযায়ী ধরা যাক ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দেওয়া হবে, তাহলে ৭ দিনে বিচারে সমস্যাটা কোথায়? নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের অপরাধ আমলযোগ্য। অপরাধীকে ওয়ারেন্ট ছাড়াও গ্রেফতার করতে পারে পুলিশ। এটা পুলিশের রুটিন কাজ। আইন উপদেষ্টা এদিকে নজর দিন। এটার জন্য তো আইনের প্রয়োজন নাই। গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত বা বিচার করলেই হয়।

 

বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে পার্লামেন্টে মাত্র ১২ দিনে আইন পাশ হয়। পৃথিবীর কোনো দেশের? সংসদে এত সহজে আইন পাশ হয় না। এখন হঠাৎ করে সরকার আইন করল, যে ৭ দিনে তদন্ত বা ১৫ দিনে ট্রায়াল শেষ করবেন?। ১৫ দিনে ট্রায়াল শেষ করতে না পারলে সরকারি কর্মতকর্তা কর্মচরীদের কিছু করার নাই। তারা যদি সহযোগিতা না করে আইন দিয়ে কী হবে।

 

মাগুরার ঘটনায় জড়িত তিনজনের ডিএনএ টেস্ট করা হয়েছে। ধরেন এখন এই ডিএনএ টেস্টে প্রাথমিকভাবে যদি অপরাধ প্রমাণিত না হয় তাহলে কী হবে? এরা প্রকৃত আসামি কিনা তা তদন্তসাপেক্ষ নির্ণয় করতে সময়সীমা চলে যাবে।

 

তিনি বলেন, আসলে নারী নির্যাতন মামলার তদন্ত ও বিচারে কোথায় বাধা আছে তা আগে চিহ্নিত করতে হবে। পুলিশ নিয়ম মেনে রুটিন কাজ করবে, চাজশিট দেবে ও কোর্টে ট্রয়াল হবে। আইনে বলাই আছে চাইলে প্রতিদিন ট্রায়াল করা যাবে। যদি জরুরি মামলা হয়, মামলাটা যদি সিরিয়াস হয়। এটা করা গেলে অধ্যাদেশের প্রয়োজন নাই। রাষ্ট্রীয় অর্গান কাজ করে না, এটাকে আপনি বুঝানোর জন্য অধ্যাদেশের বিষয়টি আসছে বলে মনে করি। এখন তো সংবিধানের আলোকে সব হচ্ছে। তাহলে আপনি এখানে নতুন আইন কেন করবেন?

 

 

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ